চিঁড়ে ভিজল না অর্থমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে। শেয়ার বাজার ও বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে খুশি করতে পারল না আর্থিক সংস্কারের চাকা দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাঁর আশ্বাস।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব বাজারের পতনের ঢেউ সেনসেক্সকে ফের টেনে নামাল ১৯ হাজারের নীচে। ২১৪ পয়েন্ট পড়ে প্রায় দু’মাস বাদে সূচক ফিরে গেল ১৮ হাজারের ঘরে। বাজার বন্ধের সময়ে তা ছিল ১৮,৮২৭.১৬ অঙ্কে।
বুধবার মার্কিন শেয়ার বাজার ওয়াল স্ট্রিটের পতনের প্রভাব এ দিন পড়ে ভারতের বাজারে। বস্তুত, ওয়াল স্ট্রিট ঝিমিয়ে পড়ার জেরে এ দিন এশীয় বাজারও পড়ে যায়। শুধু জাপানেই বাজার পড়েছে ৬ শতাংশেরও বেশি। বৃহস্পতিবার সারা দিনই মন্দা ভাব ছিল ভারতে। এই নিয়ে পরপর তিন দিনের লেনদেনে সেনসেক্স পড়ল প্রয় ৬১৪ পয়েন্ট। আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ প্রায় এক বছর পরে ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গী বদলে ভাল পূর্বাভাস দেওয়ার প্রসঙ্গে চিদম্বরম বলেছেন, সরকারও বৃদ্ধির হারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কৃতসংকল্প। এমনকী বেসরকারি ক্ষেত্রের ২৫০টি প্রকল্পের মধ্যে বাছাই করা ২০/৩০টি দ্রুত রূপায়ণের লক্ষ্যে উৎসাহ দেবে কেন্দ্র। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির উপর ঊর্ধ্বসীমা শিথিল করার আশ্বাসও দেন অর্থমন্ত্রী। কয়লা ও গ্যাসের দাম নিয়েও নীতি ফিরে দেখা হবে। কিন্তু বাজারে এই সব প্রতিশ্রুতির ইতিবাচক প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি।
অন্য দিকে, টাকার পতন অস্বাভাবিক নয়, অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্য সত্ত্বেও ডলারে টাকা ১৯ পয়সা পড়ে যায়। প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৫৭.৯৮ টাকা। আমদানি -কারীদের বাড়তি চাহিদার জেরেই এই পতন বলে বাজার সূত্রে খবর। পাশাপাশি, বিশ্ব বাজারে ডলারের পড়তি দামও রফতানিকারীদের ডলার বিক্রিতে ইন্ধন জুগিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে টাকার দাম পড়া ঠেকাতে চিদম্বরম নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দেবেন, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল বাজারের। তা না-মেলায় হতাশ লেনদেনকারীরা। অর্থমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, টাকার পতন অস্বাভাবিক নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, মেক্সিকোতেও একই অবস্থা। বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি খাতে লেনদেনে ঘাটতি ওই সব রাষ্ট্রেও বাড়ছে। তবে তাঁর মন্তব্য, “তার মানে এই নয় যে টাকা পড়তেই থাকবে। শীঘ্রই স্থিতি খুঁজে পাবে টাকা। ওঠা-পড়া যাতে লাগামছাড়া না-হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিকে, এই ঘাটতি ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে জাতীয় আয়ের ৪ শতাংশে দাঁড়াবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা রঘুরাম রাজন। অক্টোবর-ডিসেম্বরে তা ছুঁয়েছিল ৬.৭%। |