শক্ত আইন তৈরি করেছে ত্রিপুরা, পারেনি বাংলা
শ্চিমবঙ্গে সম্ভব না হলেও ত্রিপুরায় হয়েছে। নিজেদের রাজ্যে আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষার জন্য অনেক আগেই বিশেষ আইন প্রণয়ন করেছে ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকার। আর তার পরেই সেখান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বেশ কিছু ভুঁইফোঁড় আর্থিক সংস্থা। ত্রিপুরায় কোনও সংস্থার আমানত সংগ্রহে নামার ওপরেও প্রচুর বিধি নিষেধ রয়েছে, যার ফলে প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে কারও পক্ষে টাকা তুলে চম্পট দেওয়া কঠিন। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, ত্রিপুরা পারলেও পশ্চিমবঙ্গের কোনও সরকার কেন এমন পদক্ষেপ করেনি?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার বাড়বাড়ন্তের জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করে থাকেন। আজ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এ ধরনের সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রের উচিত সারা দেশে একটি অভিন্ন আইন তৈরি করা। বহু দিন ধরেই আমরা এ দাবি করে আসছি।” অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী আরও বলেন, “তথাকথিত চিট ফান্ডগুলির ব্যবসা বেড়ে উঠছে কেন্দ্রীয় সরকারের পরোক্ষ মদতে। আরবিআই বা সেবি-র আইনের ফাঁক দিয়ে ভুঁইফোঁড় সংস্থাগুলি জালিয়াতি করছে। অথচ সব জেনেও কেন্দ্র এদের নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত আইন তৈরি করছে না।” বাদলবাবু বলেন, ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণে ত্রিপুরা সরকার সীমাবদ্ধ ক্ষমতার মধ্যেই ২০০০ সালে একটা শক্ত আইন চালু করেছে।
এটির নাম, ‘দ্য ত্রিপুরা প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজিটার্স ইন ফিনান্সিয়াল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট’।
২০১১ সালে আইনটি সংশোধনও করা হয়েছে। গজিয়ে ওঠা অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির ওপরে নজরদারির বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়েছে, যার ফলে প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে আমানত সংগ্রহ করা বেশ কঠিন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “এখন নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে। এ জন্য দু’এক দিন আগে অর্থমন্ত্রী এবং অর্থসচিবের সঙ্গে আমার একপ্রস্ত কথা হয়েছে।”
শুধু কড়া আইন প্রণয়ন ও নজরদারিই নয়, অনিয়মের অভিযোগ আসার পরে বেশ কিছ সংস্থার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। অর্থমন্ত্রী জানান, সরকারি পদক্ষেপের পরে এ পর্যন্ত অন্তত ২০টি ভুঁইফোড় লগ্নি সংস্থা ত্রিপুরা থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। বাদলবাবুর আক্ষেপ, “অনিয়ম হচ্ছে জেনেও নির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারে না। কারণ এগুলির অধিকাংশই অন্য রাজ্য থেকে কোম্পানি আইনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত। কোনও কোনও ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা সেবি-আইআরডিএ-এর মতো কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থার অনুমোদনও রয়েছে তাদের।” ত্রিপুরায় কোনও সংস্থাকে মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করতে গেলে রাজ্যের ডাইরেক্টরেট অফ স্মল সেভিংস, গ্রুপ ইনসিয়োরেন্স অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ফিনান্সেস অথবা জেলা প্রশাসনের স্থানীয় অফিসে জানানোটা বাধ্যতামূলক।
সংস্থাগুলির কাজকর্মের বিবরণও এ সব অফিসে প্রতি মাসে জমা দিতে হয়। অসঙ্গতি দেখলে কোম্পানিকে রাজ্য সরকার সতর্ক করে দেয়। শর্ত পূরণ না করলে জরিমানা সুযোগ রয়েছে ২০০০ সালের আইন অনুসারে। তারই বলে ২০১২-২০১৩ অর্থবর্ষে প্রায় ২৭টি অর্থলগ্নি সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেছে অর্থ দফতর।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জন সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর বিজ্ঞাপনও দেয় সরকার। কিন্তু তাও মানুষ ঠকছেন। এর জন্য লোভ সংবরণ করতে হবে। লোভের টোপ দিয়েই প্রতারণার জাল পাতে অসৎ সংস্থাগুলি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.