৪৭৮ দিন কেটে গিয়েছে গারদের ও পারে। অবশেষে জামিন পেলেন প্রদীপ তা ও কমল গায়েন হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত, তৃণমূলের পতিতপাবন তা। ঘটনাচক্রে, যখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের তোড়জোড় চলছে, তখনই এই মুক্তি।
গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমানে দেওয়ানদিঘিতে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারা হয়েছিল সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপবাবু ও সত্তরোর্ধ্ব কমলবাবুকে। ঘটনাস্থল থেকে পতিতবাবু-সহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও কয়েক জন গ্রেফতার হলেও অর্ধেক অভিযুক্ত এখনও ফেরার।
হাইকোর্টের বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার পতিতবাবুর জামিন মঞ্জুর করে। মামলার সরকারি কৌঁসুলি আবীরচন্দ্র নিয়োগী জানান, চার্জশিট আগেই জমা হয়ে গিয়েছে। ধৃত ১১ জনের মধ্যে বাকি সকলেই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। সে কথা মাথায় রেখেই বিচারপতি পতিতবাবুর জামিন মঞ্জুর করেছেন।
যদিও কাগজপত্র এ দিন বর্ধমানে না পৌঁছনোয় পতিতবাবু জেল থেকে ছাড়া পাননি। আজ, শুক্রবার তাঁর ছাড়া পাওয়ার কথা। তবে ছাড়া পেলেও তিনি দেওয়ানদিঘিতে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বর্ধমানে তাঁর আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আমি যত দূর শুনেছি, নিজের এলাকায় ফিরতে পারবেন না, এই শর্তেই ওঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে।” |
জামিনে ছাড়া পাওয়া অভিযুক্তেরা তাঁদের নানা ভাবে ভয় দেখাচ্ছেন বলে অতীতে বহুবার অভিযোগ করেছেন প্রয়াত প্রদীপবাবুর স্ত্রী চিত্রলেখা তা। তবে এ দিন পতিতবাবুর জামিনের কথা শুনে তিনি বলেন, “এ নিয়ে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। আইন আইনের পথে চলছে। কোনও অতিরিক্ত উদ্বেগে ভুগছি না।” তবে প্রদীপবাবুর ভাই প্রবীর তা বলেন, “জামিন পেয়ে উনি এলাকায় আসার আগেই যারা এখনও ধরা পড়েনি, তারা আমাদের উত্ত্যক্ত করে চলেছে। হাওড়া লোকসভা উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন আমাদের বাড়ির সামনে বিকট শব্দে একটানা পটকা ফাটানো হয়েছে। ঘরেও ছোড়া হয়েছে। সবুজ আবির দিয়ে বাড়ির সামনে লিখে দেওয়া হয়েছে ‘শহিদ’। বোঝাই যায়, ঘটনা কোন দিকে যাচ্ছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের বক্তব্য, “আদালতের সিদ্ধান্তের উপরে কথা হয় না। তবে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ওই লোকটি জামিন না পেলেই ভাল হত।” তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাস অবশ্য দৃশ্যতই খুশি। তিনি বলেন, “গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে উনি আটকে আছেন। মানবিকতার খাতিরেই ওঁর জামিন পাওয়া দরকার ছিল।” তাঁর দাবি, “নতুন করে কোনও অশান্তির সম্ভাবনা নেই।”
|