|
|
|
|
ডিসিএল |
দোলার বনাম শোভনের গোষ্ঠী, সংঘর্ষে জখম ২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব যতই ‘এক কারখানা এক ইউনিয়ন’ নীতির কথা বলুন, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে আইএনটিটিইউসি-র দু’টি গোষ্ঠীর কাজিয়া অব্যাহত।
দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের পরে এ বার দুর্গাপুর কেমিক্যালসে (ডিসিএল) ইউনিয়নের ঘর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল দুই গোষ্ঠী। তার পিছনে ঠিকাশ্রমিক নিয়োগ নিয়ে গণ্ডগোলও রয়েছে বলে কারখানা সূত্রের খবর। সংঘর্ষে আহত হয়ে দু’জন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের নাম পার্থ চৌধুরী ও কানন সিংহ। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।
বিভিন্ন কারখানায় আইএনটিটিউসি-র সর্বভারতীয় চেয়ারম্যান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্য সভাপতি দোলা সেন বা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর থেকে আলাদা অনুমোদন পাওয়া দুই ইউনিয়নের ঝামেলা চলছেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া কমিটি বৈধ ইউনিয়ন বেছে দেবে বলে বারবার জানানো হলেও তাতে লাভ কিছু হয়নি। ডিসিএলে দোলা সেনের অনুমোদিত ‘ডিসিএল পার্মানেন্ট কর্মচারী ইউনিয়ন’ থাকা সত্ত্বেও পরে শোভনদেবের অনুমোদন নিয়ে ‘ডিসিএল পার্মানেন্ট ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন’ চালু হয়। গত ১৯ এপ্রিল শোভনদেব ওই সংগঠনের সমর্থনে কারখানার সামনে সভাও করে যান। |
|
আহত তৃণমূল কর্মীরা। কানন সিংহ ও পার্থ চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ দুই ইউনিয়নের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। শোভনদেব অনুমোদিত ইউনিয়নের পক্ষে অমর মণ্ডল অভিযোগ করেন, “রাতে ওদের লোকজন এসে আমাদের অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। আমরা প্রতিবাদ করতেই ওরা মারমুখী হয়ে ওঠে। আমাদের দুই সদস্যকে মারধর করা হয়।” খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অমরবাবুদের ইউনিয়নের দু’জন জখম হয়েছিলেন। রাতেই তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার তাঁরা কোকওভেন থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ইদানীং ডিসিএলে ঠিকাশ্রমিক নিয়োগের কথা চলছে। সেই নিয়োগের কর্তৃত্ব নিয়েই অশান্তি চলছিল। ডিসিএল পার্মানেন্ট কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে সুকুমার বর্ধন অবশ্য দাবি করেন, গণ্ডগোলে তাঁদের ইউনিয়নের কেউ জড়িত নন। তাঁর দাবি, “গত পুরভোটে কংগ্রেসের হয়ে কাজ করা কিছু লোক আইএনটিটিইউসি-র নাম ব্যবহার করে ভাঁওতাবাজি করছিলেন। স্থানীয় মানুষ তার প্রতিবাদ করেছেন।” স্থানীয় নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র নেতা উমাপদ দাস অবশ্য বলেন, “গত পুরভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হওয়ার কথা ছিল। তাই তৃণমূলের অনেকেই কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছিলেন। তার মানে এই নয় যে তাঁরা কংগ্রেস হয়ে গিয়েছেন।”
গত ১৯ এপ্রিল ডিসিএলের সামনে সভা করার মাসখানেকের মধ্যেই ডিএসপি-তে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর অনুমোদন দেওয়া ‘দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট ঠিকা শ্রমিক কংগ্রেসে’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ঠিকা শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় অবহেলার অভিযোগ তুলেছিলেন শোভনদেববাবু। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট ঠিকা মজদুর ইউনিয়নের সমর্থনে সভাও করে যান। গত ২ জুন ডিএসপি-তে ঠিকাশ্রমিক নিয়োগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমরাই গ্রামে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই গোষ্ঠী। বোমাবাজি হয়। এক আইএনটিটিইউসি কর্মী ও তিন পুলিশকর্মী জখম হন। সম্প্রতি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন, আপাতত সব কারখানাতেই প্রথম সংগঠনকেই বৈধতা দিয়ে দ্বিতীয়টির অস্তিত্ব বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত যে দুর্গাপুরের শ্রমিক-নেতাদের কানে ঢোকেনি, ডিসিএলের ঘটনায় তা ফের প্রমাণ হয়ে গেল। জলের দাবি, বিক্ষোভ। পানীয় জলের অভাব-সহ বিভিন্ন দাবি দাওয়ার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টা বেজডি কোলিয়ারির উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার আইএনটিইউসি কর্মীরা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে খনি আবাসনগুলিতে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট। স্কুল পড়ুয়াদের বাস নিয়মিত আসছে না। কোলিয়ারির স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কোলিয়ারির ম্যানেজার নন্দদুলাল সিংহ ঘটনাস্থলে গিয়ে মঙ্গলবারের মধ্যে বিশেষ বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর বিক্ষোভ ওঠে।
|
পুরনো খবর: শহরে মমতা, সংঘর্ষ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনে |
|
|
|
|
|