পঞ্চায়েত ঘিরে ফের সংশয়
ভোটে বাহিনী চাননি মুখ্যমন্ত্রী, দাবি রাজ্যের
ঞ্চায়েত ভোটের জন্য সশস্ত্র বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দেকে কোনও অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রী করেননি বলে বুধবার মহাকরণ সূত্রে দাবি করা হল।
মঙ্গলবারই শিন্দে জানিয়েছিলেন, সোমবার তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টেলিফোনে কথা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে অনুরোধ করেছেন মমতা। কেন্দ্রও বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিন্দের এই মন্তব্যের পরে পঞ্চায়েত ভোটের উপর নিরাপত্তার প্রশ্নে যে মেঘ জমেছিল, তা অনেকটাই কেটে গেল বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু মহাকরণের এ দিনের দাবি গোটা বিষয়টিকে ফের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিল।
মহাকরণ সূত্রের বক্তব্য, সোমবার সুশীল শিন্দের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছিলেন ঠিকই। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বাহিনী তিনি চাননি। ছত্তীরগঢ়ে সাম্প্রতিক মাওবাদী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশা সীমানা লাগোয়া এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত বাহিনী চেয়েছেন। শিন্দের বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করে হচ্ছে বলেও মহাকরণের একটি সূত্রের দাবি।
মহাকরণের এই দাবির কথা শুনে কিন্তু বিস্মিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রকের এক কর্তা এ দিন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার সীমানা এলাকায় ৪২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। সেখানে নতুন করে বাহিনী বাড়ানোর কোনও যুক্তিই নেই। তা হলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কেনই বা সেই প্রসঙ্গ তুলবেন!” তাঁর পাল্টা দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের জন্যই শিন্দের কাছে বাহিনী চেয়েছিলেন মমতা। শিন্দে তাঁকে রাজ্যের মুখ্যসচিবের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে নতুন করে অনুরোধ পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে তিনি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে দিচ্ছেন বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন শিন্দে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো নিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। শিন্দের সঙ্গে এ নিয়ে তাঁরা একাধিকবার বৈঠকও করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, বাহিনীর ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক চাপের কারণেই পশ্চিমবঙ্গে বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন মহাকরণের দাবির কথা শুনে প্রদেশ নেতারাও অবাক। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর যে পঞ্চায়েত ভোটে বাহিনী পাঠানো নিয়ে কথা হয়েছে, সুশীল শিন্দে নিজেই সে কথা আমাকে জানিয়েছেন। মাওবাদী এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে পঞ্চায়েত ভোটে কাজে লাগানো হবে কিনা, তা-ও আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম। শিন্দে বলেছেন, ওই এলাকা থেকে কোনও বাহিনী তোলা হবে না। কী ভাবে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বাহিনী পাঠানো যায়, তা তিনি খতিয়ে দেখছেন।”
এখন পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হওয়ার পর রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী করবে? কমিশনের সচিব তাপস রায় এ দিন বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে আমরা ৩২ হাজার সশস্ত্র বাহিনী চেয়েছিলাম। তার মধ্যে ৩০৮৩ জন পাওয়া গিয়েছে। বিষয়টি আমরা আদালতকে জানিয়েছি। ভোটের সময়ে রাজ্য কত বাহিনী দিতে পারবে তা এখনও জানায়নি।” কমিশনের একটি
সূত্র বলেন, “আমরা আশা করব, রাজ্য পর্যাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে তাদের বক্তব্য আদালতকে জানাবে। কারণ, আমরা যে পরিমাণ বাহিনী চেয়েছি তা রাজ্য সরকারকে দিতে বলেছে হাইকোর্ট। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ না-মানলে আদালতই যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আমরা আশা করছি।”
কমিশন সূত্রে এ দিন বলা হয়, ২ জুলাই ৯টি জেলায় প্রথম পর্বের নির্বাচনের জন্য ১ লক্ষ ১৮ হাজার সশস্ত্র বাহিনী লাগবে। রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি জোগাড় করতে পারেনি। পঞ্জাব, ওড়িশা এবং মধ্যপ্রদেশের কাছে বাহিনী চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য। এর মধ্যে একমাত্র পঞ্জাব থেকেই মৌখিক প্রতিশ্রুতি এসেছে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর। তবে তিন রাজ্য বাহিনী পাঠালেও কমিশনের চাহিদামতো বাহিনী দেওয়া সম্ভব নয় বলে এ দিন স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.