তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’ মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা না দিতে পারার অভিযোগ তুলল বিজেপি। তবে এ দিন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বাম প্রার্থীরা।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিল দে বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসে তুফানগঞ্জে দলের প্রার্থীরা প্রথম দিন থেকেই সমস্যায় পড়ছেন। প্রশাসনকে বলেও লাভ হচ্ছে না। মঙ্গলবারেও বক্সিরহাটে তুফানগঞ্জ ২ ব্লকে মনোনয়ন দাখিল করতে যাওয়া প্রার্থীদের জমায়েত থাকা বাড়িতে হামলা করে। মহিলা প্রার্থীদের গালাগাল দেয়। তৃণমূল সমর্থকরা ফলে ওই ব্লকে এদিন কেউ মনোনয়ন দিতে পারেনি।”
বিজেপির তরফে তুফানগঞ্জ ১ ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২ জন মনোনয়ন দাখিল করেন। তুফানগঞ্জ ২ ব্লকে তৃণমূলের সন্ত্রাসে কেউ মনোনয়ন দিতে পারেননি। বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলবার তুফানগঞ্জ ২ বিডিও অফিস লাগোয়া একটি বাড়িতে জমায়েত থাকা প্রার্থীদের হুমকি দেয় তৃণমূল। বাড়িটিতে ইট পাটকেল ছুড়ে হামলাও হয়। তার জেরে এ দিন ওই ব্লকে কেউ মনোনয়ন দিতে পারেননি।
তুফানগঞ্জে তৃণমূলের সন্ত্রাসে আশানুরূপ মনোনয়ন দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেসও। তুফানগঞ্জের কংগ্রেস নেতা দেবেন বর্মা বলেন, “গোটা মহকুমায়মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন স্তরে ৩০টি মনোনয়ন জমা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তৃণমূলের সন্ত্রাসে প্রার্থী দিতে সমস্যা হচ্ছে।”
সিপিএম সূত্রের খবর, তুফানগঞ্জের দুই ব্লক মিলিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত দুই শতাধিক মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সিপিএম ও বাম প্রার্থীরা। তার মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬৫টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৩৫টি, ও জেলা পরিষদের ৬টির সবক’টিতেই মনোনয়ন জমা করা গিয়েছে বলে প্রাথমিক হিসাব। সোমবার পর্যন্ত ওই সংখ্যা ছিল সব মিলিয়ে মাত্র ৭০টি।
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “মনোনয়ন দাখিল পর্ব শুরু থেকে গোটা মহকুমায় ব্যাপক সন্ত্রাস শুরু করে তৃণমূল। দলের দুই মহিলা প্রার্থীকেও মারধর করে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শেষ পর্যন্ত সাহস করে এদিন তিনটি স্তরের প্রার্থীদের বড় সংখ্যকের মনোনয়ন দাখিল সম্ভব হয়। সব মিলিয়ে গড়ে মোট আসনের পঞ্চাশ শতাংশে মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, সমস্যা এড়াতে এদিন সকাল ৯ টার আগেই বাম প্রার্থীদের বেশিরভাগ মহকুমাশাসকের অফিসে ঢুকে পড়েন।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। যাঁরা প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেন না, তারাই ও সব কথা বলছেন। আমরা তো প্রার্থী ধার দিতে পারি না। নির্বাচন কমিশনকে বিভ্রান্ত করতে বামেরা প্রথম দিকে মনোনয়ন দেয়নি।” প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশন তুফানগঞ্জের ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করায় এ দিন নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। অন্য দিনের চাইতে বেশি পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। শহরের রাস্তায় মহকুমাশাসকের দফতরের সামনেও অন্য দিনের চাইতে তৃণমূল সমর্থকদের জমায়েত ছিল কম। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রথম থেকেই ছিল। মঙ্গলবার তা আরও বাড়ানো হয়।” |