মা-সহ তিন সন্তানের ডুবে মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার পুর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মহব্বৎপুর এলাকাতে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন সাহানারা বেগম (২৮), মহম্মদ শাহনওয়াজ (৮), রিজওয়ানা খাতুন (৪) ও সাহবাজ আলম (২)। এ দিন দুপুরে খেলার সময় বাড়ির পিছনে একটি ডোবাতে পড়ে হাবুডুবু খেতে থাকে শাহনওয়াজ। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মা সাহানারা নামলে তিনিও ডুবে যান। মা’কে ডুবতে দেখতে বাকি দুই ছেলেমেয়েও জলে নেমে ডুবে যায়। মহিলার বাবা মহম্মদ হাফিজুদ্দিন ওই মহিলার স্বামী মহম্মদ হাকিম-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে মেয়ে ও তাঁর তিন সন্তানকে খুনের অভিযোগ জানান। মহিলা ৩টি শিশু-সহ একা বাড়িতে থাকলেও দেখভালের কেউ ছিলেন না। এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
স্থানীয় এক কিশোর ঘটনাটি দেখে বাসিন্দাদের খবর দেন। এলাকার লোক মা ও সন্তানদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করে। দেহগুলির ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, সাহানারার বাপের বাড়ি চোপড়ায়। ঘটনার পর তাঁর আত্মীয়রা মহব্বতপুরে এসে মৃত বধূর বাড়িতে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ, স্বামী ও আত্মীয়স্বজনদের গাফিলতির জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীদের ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও ঘটনাস্থলে যান।
স্থানীয় কাউন্সিলর জ্যোতি দত্ত এই দিন বলেন, “খুব দুঃজনক ঘটনা। এক ছেলেকে বাঁচাতে গিয়েই ওই বধূর মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বাকি দু’জনও মা এবং দাদাকে ডুবতে দেখে নেমে মারা গিয়েছে বলে শুনেছি।” পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় চাষি মহম্মদ হাকিম মহব্বতপুরের ওই এলাকায় তিন ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। আশেপাশে তাঁর কয়েক জন আত্মীয়ের বাড়িও রয়েছে। সকালে হাকিম কাজে চলে যান। স্ত্রী সাহানারা তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন। এই দিন দুপুরে বড় ছেলে শাহনওয়াজকে খুঁজে না পেয়ে তিনি বাকি দুই ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তাকে খুঁজতে বেরোন। বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে গিয়ে ঝোপে-ঘেরা ডোবায় ছেলেকে হাবুডুবু খেতে দেখেন তিনি। নিজে সাঁতার না জানলেও তিনি ছেলেকে বাঁচাতে জলে নেমে পড়েন। মহম্মদ হাকিম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “আমরা গোটা পরিবারটাই শেষ হয়ে গেল। কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।” |