|
|
|
|
নাড়াজোল কলেজ |
ভোটকর্মী হিসেবে হাতে কালি দিতে হবে, বিড়ম্বনায় শিক্ষকেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
চিঠিটা হাতে পেয়েই চমকে উঠেছিলেন রণজিৎকুমার খালুয়া। যা দেখছেন, ঠিক দেখছেন তো! তাঁর ডিউটি ফোর্থ পোলিং অফিসারের। মানে ভোটারদের হাতে কালি দেওয়ার। প্রয়োজনে কী ভাবে ব্যালট পেপার মুড়তে হয়, দেখিয়ে দেবেন। আগে হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। বছর পাঁচেক হল, কলেজে শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু, এমন চিঠি কখনও পাননি। নাড়াজোল রাজ কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক রণজিৎবাবু বলছিলেন, “কেন এমন হল, বুঝতে পারছি না। ফোর্থ পোলিং অফিসারের ডিউটি তো আমাদের আসার কথা নয়। ২২ জুন ট্রেনিং আছে। দেখি কী করা যায়!” নাড়াজোল রাজ কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক তপোনেন্দু কামিল্যারও ফোর্থ পোলিং অফিসারের ডিউটি এসেছে। তাঁর কথায়, “ডিউটি এসেছে বলে শুনেছি। চিঠিটা এখনও হাতে পাইনি।”
সাধারণত, কলেজ শিক্ষকদের কাছে প্রিসাইডিং অফিসারের চিঠি পৌঁছয়। অন্য দিকে, যাঁরা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, তাঁদের কাছে ফোর্থ পোলিং অফিসারের চিঠি পৌঁছয়। এ ক্ষেত্রে এমনটা হল কেন? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুধু নাড়াজোল রাজ কলেজেই নয়। আরও কিছু ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, ঘাটাল মহকুমার একটি স্কুলে সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেই ফোর্থ পোলিং অফিসারের চিঠি পৌঁছেছে। অথচ, পৌঁছনো উচিত ছিল, প্রিসাইডিং অফিসার কিংবা ফাস্ট পোলিং অফিসারের চিঠি। ওই সূত্র জানাচ্ছে, বেতনক্রম অনুযায়ী ডিউটি ভাগ হয়। জেলায় পে-স্কেলের তালিকা আসে। স্কুল-কলেজ-বিভিন্ন অফিস থেকে ওই তালিকা আসে। সেই তথ্য কম্পিউটারে রাখা করা হয়। ওই স্কুলের ক্ষেত্রে যেমন দেখা গিয়েছে, স্কুল থেকে যে তথ্য পাঠানো হয়েছিল, তাতে পে-স্কেলেরই উল্লেখ ছিল না। যার ফলে সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে ফোর্থ পোলিং অফিসারের চিঠি পৌঁছয়।
নাড়াজোল রাজ কলেজের ক্ষেত্রেও কী এমন ঘটনা ঘটেছে?
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো সমস্ত তথ্যই জেলায় পাঠিয়েছিলাম। সেখানে পে-স্কেলের বিষয়টিও উল্লেখ ছিল। কলেজের ৬ জন শিক্ষকেরই এমন ডিউটি এসেছে বলে শুনেছি।”
জেলার ওসি (ইলেকশন) বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “সম্পূর্ণ তথ্য না-পাঠানোর ফলে কিছু ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমাদের নজরে এমন ঘটনা এলেই তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” সুষ্ঠু ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। কালেক্টরেটে এখন ব্যস্ততা চরমে। পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৭৪৭টি বুথ রয়েছে। এক-একটি বুথে পাঁচ জন করে ভোটকর্মী থাকলে মোট ভোটকর্মী প্রয়োজন ২৩,৭৩৫ জন। সঙ্গে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থাৎ, ২ হাজার ৩৭৪ জন। সব মিলিয়ে ২৬,১০৯ জন ভোটকর্মীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ বার প্রশিক্ষণ শুরু হবে। |
|
|
|
|
|