সালিশি সভায় পিটিয়ে খুন করা হল এক ব্যক্তিকে। গণপিটুনিতে জখম হয়েছেন এক জন।
উদয়নারায়ণপুরের ভবানীপুর গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম শম্ভুনাথ মল্লিক ওরফে মস্তান (৫০)। তিনি উদয়নারায়ণপুর থানার হয়ে শবদেহ বহনের কাজ করতেন। সালিশি সভার দুই কর্তা গ্রেফতার।
গত ১১ মে হাওড়ার ওই এলাকায় অক্ষয় সাধুঁখা (৩০) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁর দাদা শৈলেন ও বোন শিখা কাঁড়ারের অভিযোগ ছিল, ভাইয়ের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতে তাঁদের জামাইবাবু স্বপন আঢ্য খুন করেছেন অক্ষয়কে। শিখার বক্তব্য, খুনের অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ বলে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না এলে অভিযোগ নেওয়া সম্ভব নয়। |
পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট না হয়ে সালিশি সভা ডাকার জন্য গ্রামের ষোলো আনা কমিটির কাছে আবেদন করেছিলেন শৈলেন-শিখারা। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ শুরু হয় সালিশি। অভিযোগ, স্বপনবাবুকে রাত ১২টা পর্যন্ত মারধর করা হয়। সোমবার সকালে স্বপনবাবু ও তাঁর বন্ধু শম্ভুনাথকে ফের সালিশি সভায় নিয়ে যাওয়া হয়। স্বপনবাবুর মেয়ে তিয়াসা বলে, “বাবাকে ওরা বলেছিল, আর মারধর করা হবে না। কোনও মতে মায়ের কাঁধে ভর দিয়ে উনি সালিশি সভায় যান।” ফের একপ্রস্ত মার খেয়ে স্বপনবাবু আপাতত হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সালিশি সভায় বলা হয়েছিল, আগে একাধিক খুন-জখমে শম্ভুনাথের নাম জড়িয়েছে। অক্ষয়কে খুনের ঘটনায় স্বপনবাবুই শম্ভুনাথকে ‘সুপারি’ দিয়েছিলেন বলেও সিদ্ধান্ত করা হয়। বাঁশ-লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করায় শম্ভুনাথ ঘটনাস্থলেই মারা যান। কিছু লোক তাঁর বাড়িতেও চড়াও হয়ে ভাঙচুর করে আগুন লাগায়। পরে পুলিশ গিয়ে ষোলো আনার দুই কর্তা অচিন্ত্য চক্রবর্তী এবং অষ্টিবালা পোল্যেকে গ্রেফতার করে। শম্ভুবাবুর বিরুদ্ধে থানায় এর আগে অভিযোগ ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে। গণপিটুনিতে জড়িত বাকিদের খোঁজ চলছে। শিখাদেবী বলেন, “ষোল আনার কাছে বিচার চেয়েছিলাম। কাউকে তো পেটাতে বলিনি।” |