সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই বদলে গেল পরিস্থিতি। জিয়া খানের আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেফতার করা হল প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলিকে।
কেউ বলেছিলেন অভিনয় জীবনের ব্যর্থতা, কেউ বলেছিলেন হঠাৎ করেই লাইমলাইট থেকে হারিয়ে যাওয়া, কেউ আবার দুষেছিলেন সংবাদ মাধ্যমকে, তারাই নাকি এক সময় মাথায় তুলে ভুলে গিয়েছিল তাঁকে জিয়া খানের আত্মহত্যা নিছকই এ সবের পরিণতি। শুধু মা-ই মেনে নিতে পারছিলেন না মাত্র ২৫ বছর বয়সে মেয়ের এ ভাবে চলে যাওয়া। প্রথমে সুইসাইড নোটও মেলেনি। তাই মেয়ের মৃতদেহ আঁকড়ে মুখ বুজে মেনে নিতে হয়েছিল সবটা।
রাবিয়া ঠিক করেছিলেন, মেয়ের লেখা কবিতাগুলো স্মরণসভায় পড়ে শোনাবেন সবাইকে। জিয়ার ড্রয়ারটা ঘাঁটতে ঘাঁটতেই চোখে পড়ে ৬ পাতার নোটটা। সুরজের উদ্দেশে অনেক কিছু লিখে গিয়েছেন জিয়া। আর তাতেই প্রকাশ্যে এল মেয়ের যন্ত্রণার কাহিনি। যার প্রতি ছত্রে জিয়া লিখে গিয়েছেন তাঁর মরে বেঁচে যাওয়ার তৃপ্তি। কী ভাবে দিনের পর দিন সুরজ অত্যাচার করে গিয়েছেন জিয়ার উপর। তাঁকে ধর্ষণ করেছেন, জোর করে তাঁর গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে দিয়েছেন। শেষমেশ তাঁদের সম্পর্ককে অসম্মান করে একাধিক নারী সংস্পর্শে এসেছেন। “যে দিন প্রথম তোমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, অনেক স্বপ্ন ছিল চোখে। তোমার প্রেমে পড়লাম। ভেবেছিলাম এটাই বোধহয় জীবনের সেরা পাওয়া। জানি না কেন ভাগ্য আমায় তোমার কাছে আনল। এত যন্ত্রণা, ধর্ষণ, অত্যাচার এ সব আমার পাওনা ছিল না।” চিঠিতে আরও লেখা, “এখন আর আমার কিছুই হারানোর নেই, কারণ আমি সব হারিয়ে ফেলেছি।” লিখেছেন, “তুমি আমার আত্মাকে মেরে ফেলেছে। আমার বেঁচে থাকার কোনও কারণ নেই।”
অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন জিয়া। সুরজ জোর করে বাচ্চাটাকে নষ্ট করে দেন। সে কথাও চিঠিতে জানিয়ে গিয়েছেন জিয়া। সে সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে কুরে কুরে খাওয়া আতঙ্ক “সব সময় ভয় করত, যদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি।” এ সবের পরে সুরজের উপেক্ষা আর একাধিক নারী সংসর্গ জিয়াকে ঠেলে দিয়েছিল মৃত্যুর দিকে। চিঠিতেই জানিয়ে গিয়েছিলেন, “যখন তুমি এই চিঠিটা পড়ছো, আমি হয়তো তোমাকে ছেড়ে অনেক দূরে।”
মেয়ের লেখা চিঠিটা শনিবারই পুলিশের হাতে তুলে দেন রাবিয়া। আজ ফের দাবি জানান, মেয়ের আত্মহত্যার জন্য সুরজ ও তাঁর বাবা আদিত্য পাঞ্চোলি-ই দায়ী। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে সুরজকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুরজের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। কাল তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
|