দিল মহম্মদের বৌমাকে প্রার্থী, বিতর্ক সিপিএমে
ছোট আঙারিয়া মামলায় জেলবন্দি দিল মহম্মদের বৌমাকে জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে সিপিএমের অন্দরে। দলের একাংশের মত, এমন সিদ্ধান্তের মাশুল গুনতে হতে পারে নির্বাচনে। কারণ, জনগণের মধ্যে এর বিরূপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক জেলা নেতার কথায়, “দিল মহম্মদের গ্রেফতারের পর নতুন করে ছোট আঙারিয়া মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। ফলে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ওই আসনে অন্য কাউকে প্রার্থী করা উচিত ছিল।” সিপিএমকে বিঁধতে ছাড়ছে না তৃণমূলও। দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতির মন্তব্য, “এ আর নতুন কী। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তরাই তো ওদের দলের সম্পদ! আসলে সিপিএম যেখানে ছিল, সেখানেই আছে। কোনও পরিবর্তন হয়নি ওদের!”
তবে দিল মহম্মদের বৌমা সিমারা শেখকে জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তকে ভুল মানতে নারাজ সিপিএম। অন্য কাউকে কী ওই আসনে প্রার্থী করা যেত না?

মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সিমারা শেখ।—নিজস্ব চিত্র।
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের পাল্টা প্রশ্ন, “কেন? এতে অন্যায়ের কী হয়েছে?” তাঁর কথায়, “ছোট আঙারিয়া মামলাটাই তো মিথ্যা। পুরোটাই সাজানো। তা ছাড়া কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেই তো আর দোষ প্রমাণিত হয় না। অভিযোগ তো আমার নামেও রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নামেও রয়েছে।” এক ধাপ এগিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা গড়বেতার বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ বলেন, “কেন, দিল মহম্মদের বৌমার কী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার নেই? দিল কী দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন? যাঁরা এ নিয়ে হইচই করছেন, তাঁরা ছেলেমানুষি কথাবার্তা বলছেন!”
পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা পরিষদে এ বার ৬৭টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৬২টিতে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। তারই একটিতে গড়বেতা থেকে প্রার্থী হয়েছেন সিমারা শেখ। তিনি ছোট আঙারিয়া মামলায় জেলবন্দি দিল মহম্মদের বড় ছেলের স্ত্রী। বাড়ি চাঁদাবিলায়। তবে দীর্ঘ দিন ধরে সপরিবার ঘরছাড়া। সিমরাবিবি সে ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। সিপিএম এ বার যে ৬২ জনকে জেলা পরিষদে প্রার্থী করেছে, তাঁদের মধ্যে ১২ জন শুধুই দলের সমর্থক। পার্টি সদস্য বা পদাধিকারী নন। সিমারা এঁদেরই একজন। চেষ্টা করেও শুক্রবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিকে তাঁকে প্রার্থী করায় সিপিএমের অন্দরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পর দিল মহম্মদ ধরা পড়ায় নতুন প্রাণ পায় ২০০১ সালের ৪ জানুয়ারির ছোট আঙারিয়া মামলা। ফের তদন্ত শুরু করে সিবিআই। দিলের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণও শুরু হয়েছে মেদিনীপুর আদালতে। ইতিমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন বক্তার মণ্ডল।
এ বার প্রার্থী তালিকায় তরুণদেরই গুরুত্ব দিয়েছে সিপিএম। জেলা পরিষদের ৬২টি আসনে যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের অর্ধেক ৩১ জনেরই বয়স চল্লিশের কম। দলীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই তরুণদের সামনের সারিতে তুলে আনার দাবি উঠছিল দলের অন্দরে। রাজ্যে পালাবদলের পর সেই দাবি আরও জোরালো হয়। নিচুতলার কর্মীদের সেই দাবিকে মান্যতা দিয়েই প্রার্থী তালিকায় তরুণদের গুরুত্ব দেওয়া। সঙ্গে, নতুনদের তুলে আনতে এ বার জেলা পরিষদের চার কর্মাধ্যক্ষকেও প্রার্থী করেনি সিপিএম। তবে এ সবের পরও প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিতর্ক এড়ানো গেল না। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “যখন হারানো জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চলছে, তখন প্রার্থী তালিকাকে বিতর্কের বাইরে রাখলেই ভাল হত।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.