ভারতীয় বোর্ড থেকে তাঁকে হঠাতে একাংশ সরাসরি আক্রমণের রাস্তায় নেমেছে বলে আজ বিস্ফোরক দাবি করলেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। বললেন, স্পট-ফিক্সিং কাণ্ডে তাঁর ইস্তফা দাবি করার মধ্য দিয়েই প্রথম আঘাতটা হানা হয়েছে।
স্পট-ফিক্সিং কাণ্ডের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর নিজের প্রথম সাক্ষাৎকারে কোনও রাখঢাক না করেই ভারতীয় ক্রিকেটে ক্ষমতা দখলের নোংরা রাজনীতি চলছে বলে গুরুতর অভিযোগ করলেন শ্রীনি। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে বাধ্য। শ্রীনিবাসন এ-ও দাবি করেছেন যে, তাঁর জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পন গোটা মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে সসম্মানে মাথা উঁচু করে বেরিয়ে আসবেন।
শুক্রবার একটি তামিল চ্যানেলকে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দেন শ্রীনিবাসন। ভারতীয় বোর্ড এই মুহূর্তে যে সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার পিছনে তিনি কোনও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন কি না, জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছে। যার উত্তরে শ্রীনিবাসন বলেন, “এটা শুধু ষড়যন্ত্র নয়। এটা আমাকে সরাতে সরাসরি আক্রমণ। একটা ব্যাপার খুব পরিষ্কার। একটা গোষ্ঠী বোর্ডে ঢুকতে চাইছে। আর তার জন্যই আমার ইস্তফার দাবি তুলে আমাকে এই আক্রমণ করা হয়েছে।”
শ্রীনিবাসন এ-ও বলেছেন যে, তিনি নিজে কোনও অপরাধ বা অন্যায় করেননি। তাই স্পট-ফিক্সিং কাণ্ডে নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে সরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তাঁর কথায়, “আমার বিরুদ্ধে কিন্তু কোথাও কোনও অভিযোগ নেই।”
মইয়াপ্পন যে নির্দোষ প্রমাণ হবেনই, শ্রীনিবাসন সে ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। বরং তাঁর অন্য ক্ষোভ। বলেছেন, “গুরু নির্দোষ প্রমাণ হলেও গত বারো দিন ধরে আমাকে যে ভাবে ছেঁকে ধরে বিদ্ধ করা হয়েছে, সেই অপমানটা তো কেউ আর মুছে দিতে পারবে না!”
এ দিকে, রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে রাজস্থান রয়্যালস। ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফ থেকে এ দিন জানিয়ে দেওয়া হল, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজ কুন্দ্রাকে নির্বাসিত করা হবে। যার কিছুক্ষণ পর আবার দিল্লি পুলিশ জানিয়ে দিল, তাঁর বিরুদ্ধে এখনই কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে না তারা। “ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে আমরা সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি যে প্লেয়ার, ম্যানেজমেন্ট সদস্য বা টিম মালিকের ক্ষেত্রে একই নিয়ম মানা হবে। মিস্টার কুন্দ্রা রাজস্থান ফ্র্যাঞ্চাইজির সংখ্যালঘু অংশীদার (১১.৭%)। ফ্র্যাঞ্চাইজির কাজকর্মের সঙ্গে ওঁর কোনও সম্পর্ক নেই,” এ দিন যুগ্ম-বিবৃতিতে বলেছেন রাজস্থান চেয়ারম্যান রঞ্জিত বড়ঠাকুর এবং সিইও রঘু আইয়ার। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “যদি রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়, তা হলে ওঁকে নির্বাসিত করা হবে এবং ওঁর কাছ থেকে ফ্র্যাঞ্জাইজির সব শেয়ার নিয়ে নেওয়া হবে।”
কুন্দ্রা-প্রসঙ্গে আলোচনা করতে সোমবার ভারতীয় বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সেই বৈঠকে আইপিএল থেকে ফ্র্যাঞ্জাইজির বাতিল হয়ে যাওয়া আটকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হল রাজস্থানের পক্ষ থেকে। তবে রাজ কুন্দ্রার গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে যাবতীয় জল্পনা এ দিন অনেকটা থিতিয়ে গেল দিল্লি পুলিশের ঘোষণায়। দিল্লি পুলিশের কমিশনার নীরজ কুমার বলে দিলেন, “তদন্তের খাতিরে আমরা কুন্দ্রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি শুধু। কারণ কয়েক জন বুকির কথায় ওঁর নাম উঠেছিল। আমাদের তদন্তের ফোকাস মোটেই কুন্দ্রা নন।” দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, তদন্তের খাতিরে আবার ডেকে পাঠানো হতে পারে কুন্দ্রা এবং তাঁর স্ত্রী শিল্পা শেট্টিকে।
এ দিকে, আদালতে তাঁর হয়ে লড়ার জন্য বিখ্যাত ফৌজদারি আইনজীবী মজিদ মেমন-কে নিয়োগ করলেন রাজ কুন্দ্রা।
|