৪৫ কিমি যেতে লাগছে ৩ ঘণ্টা
প্রাক বর্ষাতেই জলপাইগুড়ির রাস্তা বেহাল, ভোগান্তি চরমে
কাল ১০ টায় জলপাইগুড়ি থেকে বাসে উঠে শিলিগুড়িতে নামতে হচ্ছে বেলা প্রায় সাড়ে ১২টায়। ৪৫ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে প্রায় ৩ ঘণ্টা। কারণ বেহাল রাস্তা।
বৃহস্পতিবারের কথাই ধরা যাক। সকাল ৯.৩০ টায় বাস স্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াতেই দেখা গেল একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকলে ছুটে উঠতে যেতেই জানা গেল, গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছে। যাবে না। এর পরে জানা গেল ১০ টা ৫ মিনিটের বাসও যাবে না। তা শুনে মিউনিসিপ্যালটি মার্কেটের বাস স্ট্যান্ড ছেড়ে সকলেই উল্টো দিকে ছোটে বাস ধরার জন্য ছুটলেন। যে কয়েকজন হুড়োহুড়ি করে আগে বাসে উঠতে পেরেছেন, তাঁরা জায়গা পেয়েছেন। বাকিদের দাঁড়িয়েই থাকতে হল। কদিন ধরে এ হেন ভোগান্তির মধ্যেই কাটছে জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির নিত্যযাত্রীদের। বাস মালিক, চালকরা অবশ্য দায়ী করছেন, প্রাক বর্ষার বৃষ্টিতে বেহাল হয়ে পড়া রাস্তাকে।
গত সোমবার থেকে লাগাতার যানজটের কারণে ঘুরপথে চলাচল করতে হচ্ছে বাসগুলিকে। বেশি লাগছে সময়। ভোগান্তিতে নিত্য যাত্রীরা। প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় পুরোটাই গর্তে ভরে গিয়েছে। একটু বৃষ্টিতেই গর্তগুলি জলে ভরে যাচ্ছে বলে বাসগুলি চলাচলে অসুবিধে হচ্ছে। যেমন সমীরণ পাল জলপাইগুড়ি থেকে ১০টার বাসে ওঠেন এনজেপি থেকে বেলা সাড়ে ১২টার ট্রেন ধরার জন্য। তিনবাতি মোড়ে নামার সময়ে ওই শিক্ষককে বলতে শোনা গেল, “বৃষ্টি হলেই রাস্তায় গর্ত হবে কেন? তা হলে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সারানোর মানে কি? টাকাটা যাচ্ছে কোথায়? নেতা-কর্তারা চুপ করে থাকলে নানা ধরনের সন্দেহ হবে।”
এমনই অবস্থা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি পথের। ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল।
একই রকম দুর্ভোগে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতকারীরা। কয়েকজন ছাত্রছাত্রী জানান, তাঁরা রাস্তায় দেরি হওয়ার কারণে রোজই ইদানীং দুটি ক্লাস করতে পারছেন না। কলেজের কয়েকজন ছাত্র তো উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব প্রচুর কাজ করার কথা বললেও কেন জলপাইগুড়ি যাতায়াতের রাস্তা ঠিক মতো সারাতে পারছেন না সেই প্রশ্ন তুলে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেন, “এর পরে মন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও অনুষ্ঠানে দেখলে জলপাইগুড়ির দিকে আরেকটু নজর দিতে বলব।”
বর্ষা শুরুতেই তিক্ত অভিজ্ঞতা নিত্য যাত্রীদের । একদিকে যাতায়াতের পথে রোজ যানজট, অন্যদিকে বেহাল রাস্তা। দুই শহরের ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বের প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তাতেই পিচের দেখা নেই। পুরোটাই প্রায় ছোট পুকুরে পরিণত হয়েছে। বাসগুলি নৌকার মত হেলেদুলে চলছে। রোজই প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাস্তার এই বেহাল দশার কারণে রোজই রাস্তায় নষ্ট হয়ে থাকছে বড়বড় লরিগুলি। যার কারণে তৈরি হচ্ছে যানজট।
শেষ চারদিনে এই সড়কপথে দু একটি পথ দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এই কারণেই যানজট সমস্যা লেগেই রয়েছে। শেষ বছরের অভিজ্ঞতা বলছে রাস্তা খারাপ থাকার কারণে বেশ কিছুদিন সুপার বাসগুলির চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে, রাস্তা মেরামতি না হলে ফের এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বাস মালিকরা। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি সুপার বাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবু দে বলেন, “ইতিমধ্যে রাস্তার বিষয় নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা করেছি। তবে এই সমস্যার সমাধান না হলে আমরা বাস চালানো বন্ধ রাখতে বাধ্য হব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.