তিন বদল চেয়ে লগ্নি সংস্থা
বিল ফেরত দিল কেন্দ্র
বেআইনি লগ্নি সংস্থা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিলের কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে তা রাজ্যের কাছে ফেরত পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার বিলটি রাজভবনে পৌঁছয়। রাজ্যপালের সচিবালয় বুধবার তা মহাকরণে পাঠায়। যদিও সরকারের শীর্ষ সূত্রের দাবি, বিল ফেরত আসার কথা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তাঁদের জানা নেই। রাজভবন যথেষ্ট গুরুত্ব না-দিয়ে সাধারণ ভাবে বিলটি পাঠিয়ে দেওয়ার ফলেই বিষয়টি তাঁদের অজ্ঞাত থেকে গিয়েছে। শুক্রবার বিলটি সম্পর্কে খোঁজ করা হবে বলে জানান তাঁরা।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের পাশ করা বিলটি সম্পর্কে মতামত চেয়ে সেটি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক পরিষেবা সংক্রান্ত বিভাগ তিনটি প্রশ্ন তুলেছে। তার ভিত্তিতেই ওই বিষয়গুলি সংশোধন করে বিলটি দিল্লিতে পাঠাতে বলেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কী কী সংশোধন চাইছে অর্থ মন্ত্রক? এক, এই ধরনের অপরাধের বিচারের জন্য যে বিশেষ আদালত গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেই আদালতের বিচারপতিকে লগ্নি সংস্থার যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার দিতে হবে। তামিলনাড়ুর আইনে এই ব্যবস্থা আছে। দুই, অভিযুক্তরা যাতে আগাম জামিন না-পান, তার ব্যবস্থা করতে হবে। বিহার এবং মধ্যপ্রদেশের আইনে আগাম জামিন নামঞ্জুর করার বিষয়টি রয়েছে। তিন, অভিযুক্তদের থেকে মোটা অঙ্কের জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কত জরিমানা আদায় হবে, তা সরকার ঠিক করবে।
সম্প্রতি বিলটি নিয়ে যখন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কাছে দরবার করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, তখনই এই আপত্তির ইঙ্গিত দেওয়া হয়। সরকারের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্র এই পরিবর্তনগুলি করতে চাইলে রাজ্যের নীতিগত আপত্তি নেই। বিধানসভায় ফের বিলটি এনে এই সংশোধনগুলি করতে হবে।
তবে অর্থ মন্ত্রকের চাহিদামতো পরিবর্তন করলেই যে কেন্দ্র বিলে অনুমোদন দেবে তা নয়। কারণ, কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক এখনও বিলটি দেখেইনি। রাজ্যের অর্থ দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, ১০ বছর ধরে এ সংক্রান্ত বিল নিয়ে কেন্দ্র যত আপত্তি তুলেছে, তার বেশির ভাগটাই এসেছিল আইন মন্ত্রক থেকে। ফলে তাদের ছাড়পত্র পাওয়াটা দরকার।
রাজ্য এ বার যে বিল পাশ করেছে, তাতে অতীতের অপরাধের বিচারও নতুন আইনে করার বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে। কিন্তু আইন মন্ত্রক এই প্রস্তাব মানবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ আইন বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই মতে, পুরনো ফৌজদারি অপরাধের বিচার নতুন আইনে করা যায় না। (আইনের পরিভাষায় যাকে বলে রেট্রোস্পেকটিভ এফেক্ট) সংবিধানের ২০তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অপরাধের সময় যে আইন বলবৎ রয়েছে, সেই আইনেই শাস্তি হবে। দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে কেন্দ্র একটি কড়া আইন এনেছে। দিল্লি গণধর্ষণের বিচারপর্ব কিন্তু পুরনো আইনেই চলছে। অর্থ দফতরের কর্তাদের ধারণা, এই প্রশ্নেও আইন মন্ত্রক ব্যাখ্যা চাইবে। সে ক্ষেত্রে বিলটি কবে রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। অথচ বিলটিকে দ্রুত আইনে পরিণত করতে তৎপর রাজ্য। বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে বিলটি পাশ করা হয়। রাজ্যপাল বিদেশ থেকে ফেরামাত্র দিল্লি বিমানবন্দরে গিয়ে বিলটি সই করিয়ে সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা দিয়ে আসেন অমিতবাবু এবং মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র।
অর্থ দফতরের কর্তাদের ব্যাখ্যা, ২০০৩ সাল থেকে বিলটি নিয়ে কেন্দ্র আর রাজ্যের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। রাজ্য যে প্রস্তাবই দেয়, কেন্দ্র নানা অছিলায় তা ফেরত পাঠায়। অন্য রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে কেন এমন হয় না, তা ভেবে বিস্মিত তাঁরা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.