মনোনয়নপত্র জমা শেষ হতেই সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ক্যানিং মহকুমার বাসন্তী ও বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া, মিনাখাঁ, ও সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকা।
বৃহস্পতিবার সকালে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাসন্তীর তিতকুমার এলাকা। আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের ১৩ জন। তাঁদের ক্যানিং মহকুমা ও বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় সালামত লস্করের বড় ছেলে আবদুল্লা লস্কর সিপিএম ও ছোট ছেলে মহিবুল্লা লস্কর তৃণমূল সমর্থক। আবদুল্লার অভিযোগ, “তৃণমূল সমর্থকেরা আমাদের বাড়িতে চড়াও হয়। বাবাকে মারধর করে।” খবর পেয়ে সিপিএম সমর্থকেরা চলে আসেন। শুরু হয় সংঘর্ষ। সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের আক্রমণে ৮ জন আহত হয়েছেন। সালামতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মহিবুল্লা পলাতক। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের আক্রমণে তাঁদের এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী-সহ ৫ জন আহত হন। |
সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই তৃণমূল এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে বাসন্তীর তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত রায় বলেন, “সিপিএম এই এলাকায় আগেও সন্ত্রাস করেছে। এখনও করছে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।”
অশান্তি হয় বসিরহাটেও। সিপিএমের অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় হাড়োয়ায় ২ নম্বর গোপালপুর পঞ্চায়েতের নাটুরআঁটি, জামপুর-সহ কয়েকটি গ্রামে কয়েক জন তৃণমূল সমর্থক আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এসে সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। সিদিকুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন এআইউডিএফের অভিযোগ, তাঁদের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী সাকিরা বিবি-সহ কয়েক জনের বাড়ি ভাঙচুর করেছে তৃণমূল।
বুধবার রাতে মিনাখাঁর চাপালি গ্রামে তৃণমূলের মিছিলে হামলার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। ওই দিনই বুধবার মিনাখাঁর বামনপুকুরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে আহত হন উভয় দলের কয়েক জন। বসিরহাটের রঘুনাথপুরেও কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। আহত হন ৫ জন। বৃহস্পতিবার চাপালি বাজারে দুই সিপিএম কর্মী প্রহৃত হন। একই অভিযোগ উঠেছে হাড়োয়ার খাটরা গ্রামেও। সব মিলিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সিপিএমের হাড়োয়া উত্তর লোকাল কমিটির সম্পাদক ভুবন মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের বাইক বাহিনী তাণ্ডব চালিয়ে আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছে।” জেলা কংগ্রেস নেতা অমিত মজুমদার বলেন, “বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূলের হুমকির ফলে আমরা প্রার্থী দিতে পারিনি।” তৃণমূলের তরফে সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন দলের রাজ্য পঞ্চায়েত সেলের আহ্বায়ক নারায়ণ গোস্বামী। |