|
|
|
|
তাঁত বুনেও কীটসের স্বপ্নে বিভোর তন্ময় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত বাবা। তেমন একটা কাজও করতে পারেন না। পেটের দায়ে অগত্যা অশক্ত শরীরে কাপড় বুনতে বসেন বিনয় পাল। রোজগার বলতে মাস ফুরোলে মেরেকেটে হাজার দেড়েক টাকা। কিন্তু এই অনটন জয় করে বিনয়বাবুর ছেলে তন্ময় পাল এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪০৮ পেয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে।
মাজদিয়া-পানশীলা পঞ্চায়েতের ভাগীরথী বিদ্যাপীঠের ছাত্র তন্ময় পাল। স্থানীয় গাজনাতলা গ্রামে এক চিলতে ঘরে বাবা-মা ও বোনের সঙ্গে গাদাগাদি করে বাস কৃতী তন্ময়ের। বিনয়বাবু তাঁত বোনেন। বছর খানেক আগে স্নায়ু
তন্ময় পাল। |
রোগে আক্রান্ত হন। বল পান না দু’হাতের আঙুলে। তবু পেটের টানে কাঁপা কাঁপা আঙুলে অগত্যা তাঁতে বসা। তন্ময়ের মা রেখা পাল সুতো কাটেন। পাল দম্পত্তির দৈনিক আয় বড়জোড় ৬০ কিংবা ৭০ টাকা। ওই টাকায় সংসারের নিত্য দিনের ব্যয় সামলে তন্ময়ের পড়াশোনার জন্য অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। টিউশনি পায় নি তন্ময়। জোটেনি পর্যাপ্ত বইপত্র। অযুত-নিযুত প্রতিবন্ধকতা বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তন্ময়ের এগিয়ে যাওয়ার পথে। সে সফল হয়েছে। খুশিতে মাতোয়ারা তন্ময়ের পরিবারের। উল্লসিত ভাগীরথী বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সোমবারই প্রধান শিক্ষক নিখিল দেবনাথ ছুটে গিয়েছেন তন্ময়ের বাড়িতে। তিনি বলেন, “এত কষ্টের মধ্যে চারশোর উপর নম্বর পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। ওর বাড়ি না এলে বুঝতেও পারতাম না তন্ময় কী ভাবে পড়াশোনা করছে।” এই নজরকাড়া সাফল্যতেও কপালে চিন্তার ভাঁজ তন্ময় ও তার পরিবারের লোকজনের। তন্ময় বলে, “ইংরাজি নিয়ে পড়তে চাই। গৃহশিক্ষকের মাইনে কমপক্ষে ৫০০ টাকা। সঙ্গে আনুষাঙ্গিক খরচ খরচা তো রয়েইছে। সব মিলিয়ে বুঝতে পারছি না শেষমেশ পড়াশোনাটা চালাতে পারব তো?” |
|
|
|
|
|