|
|
|
|
আঁধার মুছে আলো দেখছে নুর মহম্মদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
সেই ছোট্ট বেলাতেই পাড়ার বন্ধুদের হাত ধরে স্কুলে পৌঁছে যেত নাকাশিপাড়ার চ্যাঙা গ্রামের জন্মান্ধ নুর হক শেখ। শুনে শুনে রপ্ত করে নিয়েছিল সহজপাঠ, নামতা। সেই থেকে জীবনে হার না মানার জেদ চেপেছিল তার মনে। ভর্তি হয় নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমিতে। সেখান থেকে মাধ্যমিকে ভাল ফল করে বাড়ি ফিরে আসে নুর মহম্মদ। ভর্তি হয় বেথুয়াডহরী জেসিএম স্কুলে। ব্লাইন্ড স্কুল থেকে সাধারণ স্কুলে। ‘রেকর্ড’ শুনে পড়াশোনা। কিন্তু কোনও কিছু দমাতে পারেনি নুর মহম্মদকে। এক দিকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও অন্য দিকে অনটন-যুদ্ধ জয় করে এ বছর নুর হক শেখ উচ্চ মাধ্যমিকে ৩৬৫ পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে। বাংলায় ৭২, ইংরেজিতে ৭৫, দর্শনে ৭৮, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৭০ এবং ইতিহাসে ৭০ পেয়েছে নুর মহম্মদ। তার এই সাফল্যে খুশি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণকান্তি বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ওর লড়াই দেখে আমরা অবাক হয়ে যেতাম। প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে ওর লড়াই করার মানসিক থেকে যে কেউ শিক্ষা নিতে পারে।” |
|
নুর মহম্মদ। |
নুর মহম্মদ ইংরেজি নিয়ে পড়তে চায়। এখন শুরু হয়েছে কলেজে ভর্তি হওয়ার তোড়তোজ। তার স্বপ্ন বড় হয়ে আদর্শ শিক্ষক হওয়া। কিন্তু কপালে চিন্তার ভাঁজ। এক দিকে একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন। শুনে শুনে স্মৃতিতে ধরে রাখতে হয় পড়া। তার উপর পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা। বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর। লোকের জমিতে কাজ করে টেনেটুনে সংসার চালান। সম্বত্সর আবার কাজ জোটে না। সামান্য এই উপার্জনে ছেলের উচ্চ শিক্ষার খরচ জুটবে কোথা থেকে সেই চিন্তায় বিনিদ্র রাত কাটছে নুর ইসলামের। তাঁর কথায়, “এত দিন চেয়েচিন্তে ছেলেকে পড়িয়েছে। এখন কলেজে পড়ার অত খরচ কোথা থেকে জোগাড় করবো?” |
|
|
|
|
|