কৌলিন্য হারাচ্ছে অর্থনীতি
কলেজে এখন কদর বাড়ছে অঙ্ক, ইংরেজির
স্কুল সার্ভিস কমিশনের দিকে তাকিয়েই কলেজে বিষয় বাছছেন সদ্য উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা। তাই স্কুলে যে সব বিষয় পড়ানো হয়, তারই চাহিদা বেশি। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের যে কারণে বাংলা বা এডুকেশন পড়ার ঝোঁকও বাড়ছে। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, প্রাণিবিদ্যা, জীববিদ্যার মতো বিষয়ে মুর্শিদাবাদের কলেজগুলিতে আসন ফাঁকা থাকছে।
বহরমপুর গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা শ্রীলতা চৌধুরীও বলেন, “স্কুলে শিক্ষকতা করা যাবে বলেই ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি-র অঙ্কের পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত অনার্স পড়ার চাহিদা তৈরি রয়েছে।” জিয়াগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ সামসুজ্জামান আহমেদ মুর্শিদাবাদ জেলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন সদস্য। তাঁর কথায়, “উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের থেকেও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে কী কী বিষয় পড়ানো হয়, তার দিকেই ছাত্রছাত্রীদের নজর বেশি। কেননা, মাধ্যমিক স্কুলই বেশি। সে কারণেই এডুকেশন নিয়েও পড়ার আগ্রহ বাড়ছে।” বহরমপুর কলেজে অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডলের বক্তব্য, “স্কুল সার্ভিস কমিশনের কথা ভেবেই যে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী বিষয় বাছছেন, তার সব থেকে বড় প্রমাণ হল, বাণিজ্য শাখায় পড়তে অনীহা।” তাঁর কথায়, মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে বাণিজ্য পড়ানো হয় না। আবার উচ্চ মাধ্যমিকেও যে সব স্কুলে বাণিজ্য শাখা রয়েছে, তা-ও নয়। তাই ছাত্রছাত্রীরা বেছে নিচ্ছেন বাংলা, ইংরেজি, ভূগোল, সংস্কৃত, অঙ্ক, ইতিহাসের মতো এমন সব বিষয় যা স্কুলে থাকবেই। অথচ প্রাণিবিদ্যা, জীববিদ্যা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতিতে আগে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ভিড় থাকত বেশি। তবে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষ সোমেশ রায়ের ধারণা, বাণিজ্যশাখার পাঠ্যক্রমে আধুনিকীকরণ দরকার। বাণিজ্যশাখা নিয়ে আগ্রহ কমে যাওয়ার সেটাও একটি কারণ। তিনি বলেন, ‘‘বাণিজ্য নিয়ে পড়ার আগ্রহটাই চলে গিয়েছে। ওই পাঠক্রমের আধুনিকীকরণ করার পাশাপাশি স্কুল স্তর থেকেই বাণিজ্য পাঠ্যক্রম চালু করাও উচিত বলে আমি মনে করি।”
মুর্শিদাবাদে জেলায় সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে কান্দি রাজ হাইস্কুলের দেবব্রত ঘোষ। দেবব্রতর আইআইটি-তে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে। অনেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়েছেন। তার ফল প্রকাশের পর বোঝা যাবে, ভর্তির চিত্রটা ঠিক কী। তবে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের একটি বড় অংশ ঝুঁকেছেন অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যার দিকেও। শিক্ষকদের ধারণা, তার একটা কারণ এই দু’টি বিষয় মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে রয়েছে। তেমনই যাঁরা জয়েন্ট দিয়েছেন, তাঁরা ভাবছেন এ বার সফল হতে বা ভাল ফল করতে না পারলে অঙ্ক বা পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হয়ে পরের বার আবার এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।
তবে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই কলকাতার কলকাতা, প্রেসিডেন্সি বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চলে গিয়েছেন। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, যাঁরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান, জীববিদ্যা বা প্রাণিবিদ্যা নিয়ে সত্যিই উচ্চশিক্ষা চান, তাঁরা সামর্থ থাকলে কলকাতায় পড়তেই পছন্দ করেন। ইংরেজি, অর্থনীতি, ভূগোলের ক্ষেত্রেও একই কথা। সোমেশবাবু বলেন, “অর্থনীতিতে এখন ছাত্রী আর খুঁজেই পাওয়া যায় না। আবার অঙ্ক নিয়ে পড়ার ঝোঁক তৈরি হয়েছে।”
লালবাগ সুভাষচন্দ্র সেন্টেনারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রভাস সামন্ত বলেন, “আমার কলেজে বাংলায় ৮৫টি আসন এবং এডুকেশনে ৬১টি। কিন্তু প্রতি বছর আবেদন জমা পড়ে ৫০০-৬০০টি। ৫৫টি আসনের ভূগোল অনার্সে হাজারের উপরে আবেদনপত্র জমা পড়ে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.