ভুয়ো পরিচয় দিয়ে বাড়ি বাড়ি অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে ধরা পড়ল এক ‘সাধু’। প্রতারণার অভিযোগে বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জীব ভট্টাচার্য (৪২) ওরফে বীরু। ঘটনাটি ঘটেছে সল্টলেকের এফ ই ব্লকে। ধৃতকে এ দিনই বিধাননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজত দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, নাম ভাঁড়িয়ে বাগবাজারের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানের নাম করে অর্থ সংগ্রহ করতে এফ ই ব্লকের একটি বাড়িতে যায় সঞ্জীব। বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পুলিশের অনুমান, আগেও এ রকম একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে সঞ্জীব। মূলত ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদেরই নিশানা করেছিল সে।
সল্টলেকের ওই বাড়ির গৃহকর্ত্রী কুমকুম সমাদ্দার পুলিশকে জানান, সকাল ন’টা নাগাদ টাক মাথা, গেরুয়া বসন পরা এক ব্যক্তি এসে জীবানন্দ মহারাজ বলে পরিচয় দেয়। পরিচারিকা দরজা খুললে সঞ্জীব জানায়, সে বাগবাজারের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে এসেছে। পরিচারিকার কাছে বিষয়টি শুনেই সন্দেহ হয় কুমকুমদেবীর। |
তিনি পুলিশকে জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান এ ভাবে বাড়ি বাড়ি ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করে না। যদিও ওই বাড়িতে ঢুকে সঞ্জীব জানিয়েছিল, বছরে এক বারই এই ধরনের অর্থ সংগ্রহ করা হয়। সাধুর কথা শুনে প্রাথমিক ভাবে অর্থ দেবেন বলেও স্থির করেন কুমকুমদেবী। কিন্তু সাধুর আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করেন এবং জানতে পারেন সেখানে ওই নামের কোনও সাধু নেই। এর পরেই সঞ্জীবকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন গৃহকর্ত্রী। ধরা পড়ে গেছে বুঝতে পেরে সঞ্জীব পালানোর চেষ্টা করলে বাড়ির সকলে মিলে তাকে আটকে রাখে। সে সময়ে একটি বই লুকনোর চেষ্টা করে সে। দেখা যায় সেটি অশ্লীল বই। এর পরেই পুলিশকে বিষয়টি জানান গৃহকর্ত্রী।
ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সল্টলেকের এক বাসিন্দা জানান, মাস দুয়েক ধরে এমন ঘটনার কথা শোনা যাচ্ছিল। চার দিন আগেই ডানকুনি কোল কমপ্লেক্সে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তির বাড়িতে জীবানন্দ মহারাজ নামে অর্থ সংগ্রহ করতে যায় এক ব্যক্তি। ধরা পড়ে কোনও মতে পালিয়ে যায় সে। এমনকী, গত কালও সল্টলেকে এক ব্যক্তির বাড়িতে ওই একই পরিচয়ে এক ব্যক্তি যায় বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরই নিশানা করছে ওই প্রতারক। এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। |