থাকবেন সেবি, কেন্দ্রের প্রতিনিধিও
সারদা তদন্তে কোর্টের কমিটি গড়ার আর্জি
বিভিন্ন স্তরে সিবিআই তদন্তের দাবি আগেই উঠেছিল। এ বার সিবিআই নয়, কলকাতা হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত করানোর আর্জি জানানো হল উচ্চ আদালতেই।
সারদা গোষ্ঠীর বিপুল অর্থ তছরুপের মামলায় আমানতকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে বলেন, এই অপরাধ কাণ্ডের ব্যাপ্তি এতটাই যে, কোনও একটি সংস্থার পক্ষে তার তদন্ত করা সম্ভব নয়। তাঁর আর্জি, হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে সেবি, কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, রাজ্য পুলিশ, কেন্দ্রীয় পুলিশ-সহ সব দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে তাদেরই তদন্তের দায়িত্ব দিক আদালত। এ দিন বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সারদা কাণ্ড নিয়ে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলাটির শুনানি চলছিল। সারদা কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্ত চেয়ে ওই মামলা করেছেন বাসবী রায়চৌধুরী নামে এক আইনজীবী।
বিকাশবাবুর আর্জি শুনে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, হাইকোর্ট এই ধরনের কোনও কমিটি গড়তে পারে কি না। এমন কমিটি তৈরির ক্ষেত্রে হাইকোর্টের এক্তিয়ারই বা কতটা। বিকাশবাবু সুপ্রিম কোর্টের রিপোর্ট পড়ে বলেন, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং যথাযথ তদন্তের জন্য হাইকোর্ট প্রয়োজনীয় যে-কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। যথাযথ তদন্ত হচ্ছে কি না, সেটা দেখাই উচ্চ আদালতের মূল লক্ষ্য। বিকাশবাবু বলেন, “মনে রাখতে হবে, সারদা কাণ্ডে বিভিন্ন রাজ্যের বিপুল সংখ্যক মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকেই। কয়েক হাজার কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। সেই টাকা কোথায় সরানো হল, কী ভাবে তা উদ্ধার করা যাবে, আমানতকারীদের টাকা কী ভাবে ফেরত দেওয়া যাবে একটি সংস্থার পক্ষে তদন্ত করে এত সব জানা বা উদ্ধারের উপায় বার করা সম্ভব নয়।”
রাজ্য সরকারের তরফে বারে বারেই আদালতে জানানো হয়েছে, সারদা কাণ্ডে তাদের গড়া বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট-ই ওই তদন্তে পারদর্শী এবং তাদের তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। তবে সিটের উপরে তাঁদের যে কোনও আস্থাই নেই, জনস্বার্থ মামলার মূল আবেদনকারীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রতি বার শুনানির সময়েই আদালতকে তা জানিয়ে দিয়েছেন। এ দিন তিনি বলেন, সারদা কাণ্ডের চার্জশিটে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট অন্যতম অভিযুক্ত অরবিন্দ চৌহানের নাম বাদ দিয়েছে। চার্জশিটে যে-সব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা যাবে না। তিনি বিচারপতিকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কেস ডায়েরি ও চার্জশিট দেখতে অনুরোধ করেন।
রাজ্যের জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে একটি সিল করা খাম তুলে দেন। তিনি বলেন, এই বন্ধ খামে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) বিভিন্ন সেক্টর ধরে যে-তদন্ত করেছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট রয়েছে।
সারদা কাণ্ড নিয়ে দায়ের করা অন্য একটি জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী উদয়নারায়ণ ভট্টাচার্য এ দিন আদালতে জানান, সারদার কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়া বা সেখান থেকে টাকা তোলা যাবে না বলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, সারদা গোষ্ঠীর কোনও সম্পত্তি হস্তান্তরও করা যাবে না। অথচ কর্মীদের ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের নামে সারদার তিনটি চ্যানেল চালানো হচ্ছে। এখন রাজ্য সরকার বলছে, দু’টি চ্যানেল তারা চালাবে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের ওই নির্দেশ থাকার পরেও সরকার বা অ্যাসোসিয়েশন কী ভাবে সারদার সম্পত্তি হাতে নিতে পারে বা তা চালাতে পারে, প্রশ্ন তোলেন উদয়নারায়ণবাবু। তাঁর অভিযোগ, এ ভাবে পিছন থেকে সরদাকেই সাহায্য করা হচ্ছে।
আজ, শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, শুনানি শেষ করে দেওয়া হবে আগামী সোমবার।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.