বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাট করে বাড়ি তৈরি বন্ধ করা, প্রতি ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া-সহ নানা দাবিতে ক’দিন আগেই কংগ্রেস পরিচালিত দুবরাজপুর পুরসভায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে বিকাল পর্যন্ত ফের একই দাবিতে দুবরাজপুর রেলসেতুর এক পাশে (এক নম্বর ওয়ার্ডে) অস্থায়ী মঞ্চ গড়ে অবস্থান বিক্ষোভ করল তৃণমূল।
অবস্থান বিক্ষোভের অবশ্য মূল দাবি ছিল, দুবরাজপুর রেলসেতুর এক পাড়ে থাকা রঞ্জনবাজার বা পুরসভার এক ও এগারো নম্বর ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া। অভিযোগ, সত্তরের গোড়ায় পুরসভায় প্রথম জলপ্রকল্প শুরু হয়েছিল। সেই প্রকল্প পর্যাপ্ত না হওয়ায় ২০০২ সালে নতুন করে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি নতুন জলপ্রকল্প উদ্বোধন হয়। তখন বাম বোর্ড ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেই জল পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে পৌঁছয়নি বলেই অভিযোগ। বিশেষ করে রেল সেতুর এ পাড়ে থাকা ওয়ার্ডগুলিতে। ২০০৩ সাল থেকে বর্তমান বোর্ড ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু তার পর থেকে এই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে বহু বার জল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কথা রাখেনি পুরসভা। |
কারণ হিসেবে রেল সেতু ডিঙিয়ে জলের পাইপ নিয়ে যাওয়ার অসুবিধার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বছর তিনেক আগে নতুন রেল সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে এ ব্যাপারে রেলের প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে জন পৌঁছয়নি বলে তৃণমূলের দাবি।
দুবরাজপুরের বাসিন্দা, জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “এই রকম পরিস্থিতিতে ২০০৮ সালে ঠিক হয় বেশ কয়েকটি গভীর নলকূপ খনন করে ওই এলাকায় নতুন ওভারহেড জলাধার তৈরি করে জল সরবরাহ করা হবে। এই জন্য এক থেকে দেড় কোটি টাকার একটি বরাদ্দ পুরসভা পেয়েছিল। অথচ একচুলও কাজ এগোয়নি। পুরসভার ক্ষমতাসীন বোর্ড বরং ওই খাতের টাকা নয়ছয় করেছে।” পানীয় জল না পেয়ে ওই এলাকার মানুষের জলকষ্ট দিনদিন বেড়েছে। ভবিষ্যতে তা ভয়াবহ আকার নেবে বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী। দুবরাজপুরের কংগ্রেস পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে গাফিলতি ও টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি পাল্টা বলেন, “ওই জলপ্রকল্প এখনও রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের দায়িত্বে আছে। এই খাতে পুরসভা আর কোনও টাকা পায়নি।” তবে তাঁর আশ্বাস, ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি কেন্দ্রীয় জল প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ওই কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। ভোট পেরিয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে। পুরপ্রধানের কটাক্ষ, “সামনে পুর নির্বাচন। তার আগে কিছু একটা করতে হবে, শুধুমাত্র সেই জন্যেই তৃণমূল এই আন্দোলন করছে।” |