মনোনয়ন ঘিরে বোমাবাজি, গাড়ি ভাঙচুর
নোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল জেলা রাজনীতি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন যত শেষ হয়ে আসছে ততই সংঘর্ষ, ঝামেলার ঘটনা বাড়ছে এই জেলায়ও। প্রথম থেকেই সিপিএম ও কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, তাঁদের দলের প্রার্থীরা যাতে মনোনয়ন দিতে না পারে সে জন্য তৃণমূল সমর্থকেরা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। এ দিন সাঁইথিয়ার ব্লক অফিস আমোদপুর এলাকায় বোমাবাজি, গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। রাজনৈতিক দলের ঝামেলার মাঝে পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্র জখমও হয়। সব অভিযোগই উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আগে থেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন সাঁইথিয়ার ওসি কার্তিক মোহন ঘোষ। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে হয় বোলপুরের এসডিপিও প্রশান্তকুমার চৌধুরীকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশান্তবাবু।
বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে দেবেন না, দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এই নির্দেশের পর থেকেই জেলায় অশান্তির সূত্রপাত। শুরুর দিন থেকে বুধবার পর্যন্ত যা মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে তার অধিকাংশই রাজ্যে শাসকদল তৃণমূলেরএমনটাই দাবি বিরোধী দলগুলির।
আমোদপুরে সংঘর্ষে ভেঙেছে বাস। ইটের ঘায়ে জখম দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র (ডান দিকে)। ছবি: অনির্বাণ সেন
কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক সঞ্জয় অধিকারী ও সাঁইথিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের চণ্ডীচরণ বাগদির অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিউড়ি, সাঁইথিয়া, কোপাই, লাভপুর-সহ আমোদপুরে ঢোকার সমস্ত রাস্তা আগলে রেখে তৃণমূল বোমাবাজি করেছে। পরে বিরোধীদের লোকবল দেখে তারা ছেড়ে পালায়।” সিপিএম নেতা সুবোধ ঘটক, দুলাল মণ্ডলরা বলেন, “ভেবেছিলাম হয়তো আর বাধা দেবে না। তাই এ দিন এলাকা থেকে বাসে করে প্রার্থী ও কর্মীদেরকে নিয়ে যাচ্ছিলাম।” তাঁদের দাবি, “আমোদপুরে ঢোকার আগে বাসের সামনে বোমা ফাটে। আমরা নেমে তাড়া করলে ওরা পালিয়ে যায়। এর পর আমোদপুরে ঢুকতে না ঢুকতেই বোমা, ইটপাটকেল দিয়ে আক্রমণ করে ওরা।”
তাঁরা জানান, দু’টি বাসের কাঁচ ভেঙে যায়। ফুলুর পঞ্চায়েতের চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিপদ নন্দী বলেন, “তৃণমূলের ছোড়া বোমা ও ঢিল থেকে বাঁচতে যে যার মতো পালাচ্ছিলাম। সে সময় আমার সামনে একটি বোমা পড়ে।” এ দিকে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে জখম বালক শেখ আহমদ বলে, “গ্রামের পরিচিত লোকজনের সঙ্গে এসেছিলাম। বাস থেকে নেমেই দেখি বোমার আওয়াজ। ভয়ে গ্রামের লোকেদের পিছনে ছুটতে থাকি। তখনই আমার মাথায় একটা ঢিল এসে পড়ে।” প্রসঙ্গত, বুধবার ইলামবাজারে সিপিএমের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের আটকে রাখা এবং জোনাল কার্যালয়ে ভাঙচুর, বাস থেকে প্রার্থীদের নামিয়ে মনোনয়ন সম্পর্কিত কাগজপত্রও কেড়ে নেওয়া, বামফ্রন্টের দুই ও বিজেপি প্রার্থীকে প্রার্থীকে অহপরণ করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ইলামবাজারে জোনাল অফিসে যাওয়ার পথে জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্নপূর্ণা মুখোপাধ্যায়ের গাড়ি আটকেও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। খয়রাশোলে সিপিএম কার্যালয় ও মোটরবাইক ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছিল।
বৃহস্পতিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান দাবি করেন, “সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “দুপুরে সিপিএম সমর্থকেরা বাসে করে এসে আমোদপুরে পার্টি অফিসে আক্রমণ করে। মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময়ে আমাদের কয়েক জন প্রার্থীকেও মারধর করে ওরা। সিপিএম বোমা, ইটপাটকেল ছোড়ে।” এ দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় দলের বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, এ দিনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.