‘সন্ত্রাস’ এড়াতেই ছায়াপ্রার্থীর কৌশল, দাবি বামের
নোনয়ন দাখিল শেষ হওয়ার পর দিনই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করল সিপিএম। কিছু এলাকায় সব আসনে প্রার্থী দিতে না পারলেও অনেক জায়গায় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে এক আসনে বামফ্রন্টের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ এড়াতেই এই ‘ছায়াপ্রার্থী’ দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বামফ্রন্ট নেতারা।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদারের অভিযোগ, “আমরা পঞ্চায়েতের ৯৫.৩৪ শতাংশ আসনে ও পঞ্চায়েত সমিতির ৯৮.১৪ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছি। কিন্তু মনোনয়ন দাখিলের পরেই আমাদের প্রার্থীদের তা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে তৃণমূলের লোকজন। আজ সারা দিনে অন্তত ১২ জায়গায় আমাদের প্রার্থীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে গ্রামে বাস করতে দেওয়া হবে না বলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ সুপারের কাছে পেশ করা স্মারকলিপিতে সিপিএমের বর্ধমান শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক তাপস সরকার অভিযোগ করেছেন, গলসি, আউশগ্রাম, রায়না, ভেদিয়া, দেবশালা, ভাতার, বর্ধমানের গোপালপুর ও রায়ানে, রায়নার হিজলনা, ভাতারের ভূমশোর, জামালপুর ও অমরপুরে তাঁদের প্রার্থী, প্রস্তবক ও কর্মীদের উপরে হামলা হয়েছে। কয়েক জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার কথা জানানো হলেও পুলিশ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়নি বলে তাপসবাবুর দাবি।
জেলার ১৩টি ব্লকে পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি সিপিএম। এর মধ্যে রয়েছে রানিগঞ্জ, বারাবনি, গলসি ১, পাণ্ডবেশ্বর, রায়না ১ ও ২, খণ্ডঘোষ, কেতুগ্রাম ১, মঙ্গলকোট, বর্ধমান ১ ও ২, ভাতার এবং আউশগ্রাম ১। পঞ্চায়েত স্তরে রায়না ১ ব্লকে ২৪টি, রায়না ২-এ ৮৬টি, খণ্ডঘোষে ২৭টি, কেতুগ্রাম ১-এ ৮২টি, মঙ্গলকোটে ৭৭টি, বর্ধমান ১-এ ৫৩টি, বর্ধমান ২-এ ২৩টি এবং ভাতারে পঞ্চায়েতের ২৬টি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বামফ্রন্ট। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে রায়না ১-এ দু’টি, রায়না ২-এ ৯টি, খণ্ডঘোষে ৫টি, কেতুগ্রাম ১-এ ১০টি, মঙ্গলকোটে ১৮টি আসনে প্রার্থী নেই বামেদের।
এরই মধ্যে আবার জেলার ২২টি ব্লকে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে আসন সংখ্যার চেয়ে বামফ্রন্টের প্রার্থী সংখ্যা বেশি। অর্থাৎ, এক আসনে তাদের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। সিপিএম-ই অনেক জায়াগায় এক আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন। বামফ্রন্টের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, এটি তাদের একটি ‘কৌশল’। এই প্রার্থীদের অনেকেই ‘ছায়া’। অমলবাবুর দাবি, নানা এলাকায় তাঁদের প্রার্থীদের চাপ দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হবে, এই আশঙ্কায় এই ‘ছায়াপ্রার্থী’দের মনোনয়ন জমা করানো হয়েছে।
তৃণমূলের বর্ধমানের পর্যবেক্ষক অলোক দাস অবশ্য কোনও রকম হামলা বা সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকির কথা মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, “পরাজয়ের ভয়ে সিপিএম প্রার্থীরা নিজেরাই সরে যেতে চাইছেন। আর তার দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন তাঁদের নেতারা।” পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “সিপিএমের কয়েক জন নেতা আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, কয়েকটি জায়গায় তাঁদের প্রার্থী বা প্রস্তাবকদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছি তাঁদের।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ও কর্মীদের নিরাপত্তা চেয়ে বৃহস্পতিবার আসানসোলের জেলা গ্রন্থাগারের সামনে বিক্ষোভ দেখাল বামেরা। যোগ দেন আসানসোলের সাংসদ তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বংশগোপাল চৌধুরী। তাঁর নেতৃত্বে বামেদের একটি দল মহকুমাশাসক অমিতাভ দাসের সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থার আবেদন জানান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.