দিন পেরোলেই কর্মকাণ্ডে ইতি, শুকিয়ে মরে যায় গাছ
র্মসূচির অন্ত নেই। পদযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পড়ুয়াদের দিয়ে বৃক্ষরোপণ— পরিবেশ দিবসে ফি বছরই গা-ঝাড়া দিয়ে নেমে পড়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুরসভা। খনি ও শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ রক্ষা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়ে কর্তাদের কপালে। দূষণ রোধে সারা বছর ধরে নানা কাজকর্মের আশ্বাসবাণীও মেলে। কিন্তু দিন পেরোলেই ভাবনার অবসান। বছর বছর ঘটা করে পরিবেশ দিবস পালন নিতান্তই প্রহসন, অভিযোগ আসানসোলের নাকাল বাসিন্দাদের।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখার আধিকারিক অঞ্জন ফৌজদার জানান, এ বারও তাঁরা জুন মাস জুড়ে নানা কর্মসূচি নিয়েছেন। শিল্পাঞ্চলে দূষণ ঠেকাতে শহরে লক্ষাধিক গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরসভাও বৃক্ষরোপণ-সহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। সরকারি অর্থব্যয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান ও পরিকল্পনা প্রতি বছরই হয়। কিন্তু কাজের কাজ যে বিশে, হয় না, বোঝা যায় শহর ঘুরলেই।
আসানসোল শহরে ঢোকার মুখে কালিপাহাড়ির কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশে পাহাড়প্রমাণ আবর্জনা।
কল্যাণপুরে কয়েক একর জমি জুড়ে গাছ লাগিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখা।
কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গাছের আর দেখা নেই, রয়েছে শুধু দুমড়ে যাওয়া বেড়া। ছবি: শৈলেন সরকার।
যাতায়াতের সময়ে দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে আসে। ৫০টি ওয়ার্ডের যাবতীয় আবর্জনা ওখানে ফেলা হয়। অথচ তা নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল রানিগঞ্জে মঙ্গলপুরের কাছে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্প এলাকায়। এই আবর্জনা দূষণ ছড়াচ্ছে জেনেও তাঁরা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সেই প্রশ্নে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক অঞ্জনবাবু বলেন, “পুর কর্তৃপক্ষকে বহু বার বলেছি, আবর্জনা মঙ্গলপুরে নিয়ে যেতে। কিন্তু তাঁরা শুনছেন না।” ডেপুটি মেয়র অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এই আবর্জনা ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’-এ নিয়ে যাওয়ার জন্য দরপত্র ডেকেছি। নতুন পুর কমিশনার নিয়োগ হওয়ার পরেই কাজের বরাত দেওয়া হবে।” তবে কাজ কবে শুরু হয়, আপাতত সেই অপেক্ষায় শহরবাসী।
বছরখানেক আগে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখা শহরের নানা জায়গায় বৃক্ষরোপণ করেছিল। গাছগুলির এখন কী অবস্থা? পর্ষদের আধিকারিক অঞ্জনবাবুর সটান দাবি, গাছগুলি বড় হয়েছে। যথাযথ দেখভালও হচ্ছে। বাস্তব ছবি অবশ্য অন্য। কল্যাণপুরে কয়েক একর জমিতে গাছ লাগিয়েছিল পর্ষদ। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একটি গাছও জীবিত নেই। ঝুলছে শুধু পর্ষদের লাগানো বোর্ড। কথায় ও কাজে এত ফারাক কেন, তার সদুত্তর মেলেনি। তবে অঞ্জনবাবুর দাবি, “বাসিন্দাদের সচেতনতার অভাবেই গাছগুলি মরে গিয়েছে।” বস্তুত, এলাকাবাসীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়েই হাত ধুয়ে ফেলেন তিনি। শহরের বাসিন্দারা বলছেন, পরিবেশ রক্ষা বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এ ভাবে এক দিনের কর্মসূচিতে কোনও সুরাহা সম্ভব নয়। পরিবেশ দূষণ রোধের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কন্যাপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বীরবব্রু বাহণ ঢলের কথায়, “শহরে ঢুকতে গেলে আবর্জনার ধাক্কা খেতে হয়। বৃক্ষরোপণ হয়, অথচ গাছ বাঁচানোর কথা ভাবা হয় না। শহরে প্লাস্টিকের ব্যবহার আজও বন্ধ হয়নি। প্রতি বছর সরকারি টাকা খরচে পরিবেশ দিবস পালন প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.