রুদ্ররূপ মুখোপাধ্যায় (রবিবাসরীয়, ২১ এপ্রিল) ‘হ্যামলেট’ নাটক অভিনয় (দেশ: সাংহাই পিকিং অপেরা কোম্পানি, পরিচালক : ফেং গ্যাং, ২০০৭) সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এই নতুন ধরনের (পাশ্চাত্যের চোখ দিয়ে দেখলে) ফর্মে দর্শকের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ থাকে অভিনেতাদের’। উদাহরণস্বরূপ হ্যামলেটের তরবারির খোঁচা খেয়ে পড়ে গিয়ে আবার উঠে ‘হ্যামলেট মারা গেল’ বলা এবং গা-ঝেড়ে উঠে চলে যাওয়া। নিজভূমিকা শেষে গারট্রুডের চা-পান বা গোটা টিমের গাইতে গাইতে, বাজাতে বাজাতে মঞ্চ থেকে দর্শকের কাছে নেমে আসার কথা লিখেছেন। এতে মজার বিষয় গড়ে ওঠার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল: দর্শককে ভুলতে না-দেওয়া যে, তাঁরা একটা নাটক দেখছেন। মোদ্দা কথা হল: নাটকটিতে Alienation Effect অক্ষরে অক্ষরে মানা হয়েছে, আর যে নাট্যকারের সঙ্গে Alienation Effect ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, তিনি হলেন ব্রেখট, যাঁর উল্লেখ এই আলোচনায় এক বারও করা হয়নি। |
Alienation Effect-এর মূল উদ্দেশ্য হল, নাটককে এমন ভাবে মঞ্চস্থ করা হবে, যাতে দর্শক সম্পূর্ণ ভাবে নাটকে ডুবে যেতে না পারেন এবং নিজের সচেতন বিচারবুদ্ধি ও সমালোচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পারেন। এ প্রসঙ্গে ব্রেখটের প্রবন্ধ ‘Alienation Effect in Chinese Acting’ (1936) এবং ‘Epic Theatre’ শব্দবন্ধটিও উল্লেখ্য।
পল্লবী মিত্র। বর্ধমান
|
‘মাইনে নিয়ে চিন্তিত শিক্ষকরা, আক্ষেপ সুকান্তর’ (২৫-৫) শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সমর্থনে লিখছি। সুদীর্ঘকাল অধ্যাপনা ও অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত থাকার সুবাদে একাধিক মহাবিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন ব্যবস্থা ও প্রশাসন সম্পর্কে আমার যে অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়েছে, তাতে এ কথাই মনে হয় যে, সমস্যাটির মূল আরও গভীরে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, রাজ্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অজস্র নিয়ম ও নির্দেশের তোয়াক্কা না করে অধ্যাপকদের একটি বড় অংশ পঠন-পাঠন তো দূরের কথা, কলেজে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেও অনীহা প্রকাশ করেন। কলেজের বিপুলসংখ্যক অধ্যাপক যদি বা দয়া করে কলেজে আসেন, তা হলেও ছাত্রদের জন্য সময় ব্যয় করার পরিবর্তে নিজেরাই গল্পগুজব করে অথবা বসে থেকে বাড়ি চলে যান। অনেক অধ্যাপক-অধ্যাপিকা বাড়ি ভাড়া বাবদ মোটা অঙ্কের অর্থ পেলেও কলেজের কাছাকছি না-থেকে প্রতিদিন দূর থেকে যাওয়া-আসা করেন। যাতায়াতেই তাঁদের সমস্ত শক্তি, উত্সাহ নিঃশেষিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
কলেজের পঠনপাঠন ও দৈনন্দিন পরিচালনার নানা কাজে এঁদের কোনও সক্রিয় ও সদর্থক ভূমিকা থাকে না। অথচ এঁরাই তাঁদের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিন্দুমাত্র বিঘ্নিত হলে জোটবদ্ধ হয়ে বৈপ্লবিক আচরণে কলেজের শান্তি বিঘ্নিত করেন। কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে এই সব অধ্যাপক তাঁদের স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী কোনও মানুষকে যে কোনও ভাবে, এমনকী রাজনৈতিক সুযোগসুবিধা কাজে লাগিয়েও অপসারণে সচেষ্ট হন।
বাণীপ্রসাদ সেন। আরামবাগ
|
অরিজিত্ ঘোষের চিঠিতে (১৬-৫) ছাপা হয়েছে, ভীষ্মের শঙ্খ ‘পৌণ্ড্র’, নকুলের শঙ্খ ‘সুকোষা’। কিন্তু উদ্বোধন গীতায় (ফাল্গুন ১৩৭৫, পৃষ্ঠা ১৭-১৮) ভীষ্মের শঙ্খের কোনও নাম উল্লেখ পাচ্ছি না, পাচ্ছি ভীমের শঙ্খ ‘পৌণ্ড্র’ আর নকুলের শঙ্খ ‘সুঘোষ’। সেখানে প্রাসঙ্গিক শ্লোক দুটি হল
এই রকম:
পাঞ্চজন্যং হৃষীকেশো দেবদত্তং ধনঞ্জয়ঃ।
পৌণ্ড্রং দধ্মৌ মহাশঙ্খং ভীমকর্মা বৃকোদরঃ ১৫¶
অনন্তবিজয়ং রাজা কুন্তীপুত্রো যুধিষ্ঠিরঃ।
নকুল সহদেবশ্চ সুঘোষমণিপুষ্পকৌ¶ ১৬
সত্যরঞ্জন ভট্টাচার্য। কলকাতা-৫০ |