দরিদ্রদের বাড়ি তৈরির প্রকল্প
বর্ষার আগে কাজ শেষ নিয়ে অনিশ্চয়তা
গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির কাজ চলছে খুবই ধীর গতিতে। ফলে আসন্ন বর্ষাতেও গরিব সাধারণ মানুষ বাড়ির ছাদ পাবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হতাশ উপভোক্তারা। প্রকল্পের গাফিলতি নিয়ে সরব হলে সমস্যা হতে পারে এই আশঙ্কায় কেউ প্রতিবাদ করতেও সাহস দেখাচ্ছেন না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গীতাঞ্জলি প্রকল্পের বাস্তব চিত্রটা এমনই। প্রশাসনিক কর্তাদের অবশ্য দাবি, দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রথম দিকে দরপত্রের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেওয়ায় কিছু দেরি হয়েছে। তবে বর্ষার আগেই বেশির ভাগ বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হবে।
সাতপাটিতে গীতাঞ্জলি প্রকল্পের অসম্পূর্ণ বাড়ি। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
প্রশাসনিক কর্তারা যা-ই দাবি করুন না কেন, তাঁদের পরিসংখ্যানই উল্টো কথা বলছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ২৫১৪টি বাড়ি তৈরির অনুমোদন পেয়েছিল। বাড়ি পিছু ১ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা হিসাবে মোট ব্যয় ধরা হয় ৪১ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা। মার্চ মাসের শেষে খরচের হিসাব দেখতে গিয়ে প্রশাসনিক কর্তারা দেখেন ওই প্রকল্পে খরচ হয়েছে মাত্র ৪ কোটি টাকা! এরপরই তত্‌পর হয় প্রশাসন। প্রতিটি ব্লককে অতিরিক্ত নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরের মে মাসের শেষে দেখা দেয় খরচ বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা।
কিন্তু কেন টাকা খরচ করা গেল না?
এ বিষয়ে অবশ্য প্রশাসনিক কতার্রা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় উন্নয়নের কাজ নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না। তবে এরই সঙ্গে তাঁদের যুক্তি, এই প্রকল্প চালু হয়েছিল ২০১২-১৩ আর্থিক বছরের শেষে। টাকা আসতেও দেরি হয়েছিল। টাকা এলে তা বিডিওদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার মেলেনি। কারণ, আবাসন দফতর বাড়ি তৈরির যে নকশা বানিয়েছিল তার সঙ্গে প্রস্তাবিত ব্যয়ের ফারাক ছিল। পরিকল্পনাতে ছিল ‘টয়লেট ব্লক’ তৈরি করতে হবে। কিন্তু তা খরচের হিসাবে ধরা ছিল না। ফলে কিছু ব্লক ঠিকারাদারদের বুঝিয়ে দরপত্র আহ্বান করতে পারলেও বেশিরই তা পারেনি। এই পরিস্থিতিতে কাজ শুরু করতেই দেরি হয়ে যায়।
গরিব মানুষদের জন্য বাড়ি তৈরির এই গীতাঞ্জলি প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, শুধুমাত্র বিপিএল তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের নয়, তার বাইরেও যদি কোনও গরিব মানুষ থাকেন, যাঁর বাসস্থান নিয়ে সমস্যা রয়েছে, তিনিও এই সুবিধে পাবেন। আবার এ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। কারণ, এই তালিকা ঠিক করার অধিকার দেওয়া হয় কেবল মাত্র শাসক দলের বিধায়কদেরই। সব বিতর্কের পরেও উপভোক্তার নাম আসে। সেই মতো বাড়ি তৈরির অনুমতি মেলে। কিন্তু আর্থিক বছরের শেষেও নতুন বাড়ি পেলেন না গরিবেরা। অভিযোগ, উদাসীনতার কারণেই বাড়ি তৈরির টাকা থাকা সত্ত্বেও তা খরচ করতে ব্যর্থ জেলা প্রশাসন। উপভোক্তারা জানিয়েছেন, “কাজ হচ্ছে, তবে বর্ষার আগে শেষ হবে কিনা বলা কঠিন। না হলে এই বর্ষাতেও ফের কষ্ট করেই থাকতে হবে।” এ ব্যাপারে তাঁদের আশ্বস্ত করতে পারেননি প্রশাসনিক কর্তারাও।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.