তৃণমূলের দলীয় কোন্দলের প্রভাব পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের মনোনয়ন-পর্বেও। একটি আসনের জন্য একাধিক মনোনয়ন দাখিল হয়েছে। স্বভাবতই অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিলই। তবে জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে এমন অবস্থা অনভিপ্রেত!”
আজ, বুধবার মনোনয়নের শেষ দিন। মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সময়মতোই প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে।” মনোনয়ন-পর্বের পরিসংখ্যান দেখে দলের একাংশ নেতৃত্বের কপালে অবশ্য চিন্তার ভাঁজ পড়ছে। তাঁদের আশঙ্কা, দল হুইপ জারি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করাতে না পারলে গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু আসনে, এমনকী পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের আসনেও তৃণমূলের গোষ্ঠী লড়াই হবে। একপক্ষ দলের প্রতীক পাবে। অন্যপক্ষ প্রতীক পাবে না।
কেশপুরে জেলা পরিষদের একটি আসনের জন্য মঙ্গলবার মনোনয়ন দাখিল করেছেন দুই তৃণমূল নেতা। একজন তপন চক্রবর্তী। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি। অন্য জন ইমদাদুল ইসলাম, তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতা। দুই নেতারই দাবি, দলের নির্দেশেই মনোনয়ন। মঙ্গলবার এই আসনেই মনোনয়ন দাখিল করার কথা ছিল তৃণমূলের আর এক নেতা চিত্ত গরাইয়ের। তিনি দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। তবে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে আসেন। রাজ্য নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত পেলে আজ, বুধবার তিনি মনোনয়ন দাখিল করবেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন চিত্তবাবু।
দাঁতন ২, সাঁকরাইলেও একই পরিস্থিতি। দাঁতন ২ ব্লকে জেলা পরিষদের ২টি আসন। অথচ, তৃণমূলেরই তিন জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। সাঁকরাইলে জেলা পরিষদের ২টি আসনে তৃণমূলের চার জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল। যেমন, শালবনিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ১৩৪। সোমবার পর্যন্ত এখানে তৃণমূলের মনোনয়ন ১৪৫টি। ডেবরায় ২১৪টি আসনের জন্য ২৬৭টি, নারায়ণগড়ে ২২৪টি আসনের ক্ষেত্রে ২২৭টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। জামবনিতে ৮৫টি আসনে ৯০টি, সাঁকরাইলে ৮৭টি আসনে ৯০টি মনোনয়ন জমা দিয়েছে তৃণমূল।
পঞ্চায়েত সমিতির ছবিটাও তৃণমূলের পক্ষে অস্বস্তিকর। ডেবরায় পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ৪২। সোমবার পর্যন্ত মনোনয়ন জমা পড়েছে ৪৩টি। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “বুধবারের পর ছবিটা কী হয়, সেটাই দেখার।” |