|
|
|
|
|
জেলা পরিষদের প্রার্থীই
চূড়ান্ত হল না তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
|
হাতে আর মাত্র তিন দিন। এখনও পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি তৃণমূল। বিস্তর আলোচনার পর জেলা থেকে প্রস্তাব গিয়েছে রাজ্যে। রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত জানাননি। যার ফলে দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়কে বলতে হচ্ছে, “গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে মনোনয়ন-পর্ব শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদের ক্ষেত্রে আর একটু সময় লাগবে।” তৃণমূলের এক জেলা নেতা মানছেন, “যা পরিস্থিতি তাতে মঙ্গলবারের আগে জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়া অসম্ভব। অধিকাংশ আসনে বোধহয় বুধবার, শেষদিনেই মনোনয়ন জমা হবে।” কেন এমন অবস্থা? তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দল এ বার রাজ্যপাটে থাকায় অনেকেই প্রার্থী হতে চাইছেন। তৃণমূলের টিকিটে লড়তে চেয়ে নেতাদের বাড়ি, পার্টি অফিসে হামলে পড়ছেন অনেকেই। পাঁচ বছর আগে যে কেশপুরে দলীয় কর্মীই খুঁজে পাওয়া যেত না, ঘরছাড়া কয়েকজনকে প্রার্থী হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েও নিরাশ হতে হত জেলা নেতৃত্বকে, সেই কেশপুরেই তৃণমূলের হয়ে জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থী হওয়ার হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। অবস্থা এমন যে, একটি আসনের ক্ষেত্রে জেলা থেকে ৮ জনের নাম পাঠাতে হয়েছে। |
|
তৃণমূলের প্রচার হাতিহল্কায়।—নিজস্ব চিত্র। |
অন্য এলাকার ছবিটাও কমবেশি একই। কোথাও প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন দলেরই ব্লক সভাপতি, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি। কোথাও জেলা কমিটির প্রথম সারির নেতা। কোথাও সংরক্ষণের জেরে নিজে প্রার্থী হতে না পেরে স্ত্রী বা পরিজনকে প্রার্থী করার তত্পরতা চলছে। ব্লক থেকে জেলা নেতাদের কাছে ফোন আসছে, “দাদা, একটু দেখবেন।” কেউ আবার সংরক্ষণের গেরোয় নিজের এলাকায় প্রার্থী হতে না পেরে অন্য এলাকার নেতাদের কাছে দরবার করছেন। এ ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায় গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বও কাজ করছে।
প্রত্যাশিত ভাবেই এই পরিস্থিতির প্রতিফলন পড়ছে মনোনয়নে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন ৩,৮৪৬টি। পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৭৯৮টি ও জেলা পরিষদে ৬৭টি। গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন- পর্ব। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৫ মে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন, এই চার দিনে গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের জন্য মনোনয়ন জমা পড়েছে ২,৯৮২টি। এর মধ্যে তৃণমূলের ১,২৩৬টি, সিপিএমের ১,২৬০টি। পঞ্চায়েত সমিতির ৫৭৯টি মনোনয়নের মধ্যে তৃণমূলের ১৭০টি, সিপিএমের ২৮১টি। আর জেলা পরিষদে ক্ষেত্রে মনোনয়ন জমা পড়েছে মাত্র ৩৪টি। এর মধ্যে কেউই তৃণমূল বা সিপিএমের প্রার্থী নন। বামফ্রন্ট আগেই ঘোষণা করেছে, দলীয় প্রার্থীরা আজ, সোমবার মনোনয়ন জমা দেবেন। কিন্তু, তৃণমূলের এমন কোনও ঘোষণা নেই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত চারদিনে গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে সব থেকে বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে নারায়ণগড়ে, ২৯৮টি। সব থেকে কম চন্দ্রকোনা ২ ব্লকে, মাত্র ৭টি। কেশপুরে ৬০টি, গড়বেতা ১ ব্লকে ৪২টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে নারায়ণগড় ছাড়া দু’শোর বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে আরও দু’টি ব্লকে। ডেবরায় ২৫৩টি, সবংয়ে ২১৫টি। তবে, এই সবকে ছাপিয়ে আসনে উঠে আসছে শাসক তৃণমূলের জেলা পরিষদ আসনের ক্ষেত্রে প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ার বিষয়টিই।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই কী এই পরিস্থিতি? জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষের দাবি, “এ সব অপপ্রচার। সময় মতোই প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করা হবে।” |
পুরনো খবর: প্রার্থী ঠিক করতে বেগ পেতে হচ্ছে তৃণমূলকেই |
|
|
|
|
|