লোকসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ ও প্রকল্প রূপায়ণের জন্য সনিয়া-রাহুল লাগাতার তাড়া দিচ্ছেন। খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে অর্ডিন্যান্স বা অধ্যাদেশ জারি করার ব্যাপারে এগিয়েও ফের পিছিয়ে এল সরকার। শীর্ষ মহল থেকে কাল রাতেই বলা হয়েছিল, মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে অধ্যাদেশে অনুমোদন দেওয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ সে সিদ্ধান্তও নিতে পারল না সরকার।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে চিদম্বরম বলেন, “বিষয়টি আজ আলোচ্য সূচিতেই ছিল না।” তবে আইন মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করে ক্যাবিনেট সচিবালয়ে আজ দুপুরেই পাঠিয়ে দেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল। কিন্তু তার পর সেই খসড়া মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিবেচনার জন্য পাঠানোর সময়ই আর ছিল না।
স্বাভাবিক ভাবেই অধ্যাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠেছে। তবে সরকারের একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া না হলেও, খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে অধ্যাদেশ জারির সম্ভাবনা ষোল আনা রয়েছে। কেন না প্রস্তাবিত বিলটি-র পথ আটকাতে বিরোধীরা যে ভাবে উঠেপড়ে লেগেছে, তাতে সংসদে বিলটি পাশ করানো কঠিন হতে পারে। তা ছাড়া সমাজবাদী পার্টি তো সরাসরি বিলটির বিরোধিতা করছে। কিন্তু অর্ডিন্যান্স জারি হয়ে গেলে বিরোধীদের পক্ষে সংসদে বিলটি একেবারে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে না।
বিজেপি নেতৃত্বও সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, খাদ্য সুরক্ষা বিল সংসদে পাশ করানোর পরিবর্তে অধ্যাদেশ জারি করা হলে তাঁরা বিরোধিতা করবেন। ক’দিন আগেই সুষমা স্বরাজ জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই বিলটি সংসদে পাশ করাতে তাঁরা আগ্রহী। এ জন্য সংসদের বর্ষা অধিবেশন এগিয়ে আনলেও আপত্তি নেই। কিন্তু সরকার সেই প্রস্তাবকে তোয়াক্কা না করায় আজ সুষমা বলেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ বিলকে অধ্যাদেশের মাধ্যমে আনার বিরোধিতা করছি আমরা।”
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, দল গোড়া থেকে এই বিলকে সমর্থন করার কথা বলে আসছে। তবে সে জন্য আলোচনা দরকার। সংসদই তার উপযুক্ত মঞ্চ। কিন্তু সরকারের নিজের ঘরেই এই বিল নিয়ে সমস্যা রয়েছে। শরদ পওয়ারদের বিরোধিতা রয়েছে। অথচ ভোট বছরে খাদ্য সুরক্ষা বিলকে সামনে রেখে কংগ্রেসকে রাজনৈতিক ফায়দাও তুলতে হবে। ভবিষ্যতে বিল যদি পাশ না-ও হয়, তার দায় বিরোধীদের ঘাড়েই ঠেলে দেওয়ার কৌশল নিলেন সনিয়া। অভিযোগ, আসলে এই বিলটি পাশ করানোর ব্যাপারে তিনি নিজেই আন্তরিক নন। |