খাদ্য সুরক্ষা বিল
বিশেষ অধিবেশনে আপত্তি নেই বিজেপির
খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে কার্যত কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল বিজেপি। বিলটি পাশ করাতে কংগ্রেস নেতৃত্ব যখন বিশেষ অধিবেশন ডাকা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে, তখন এক ধাপ এগিয়ে সেই বিশেষ অধিবেশনকে আজ স্বাগতই জানাল তারা। সংসদে প্রধান বিরোধী দলের তরফে আজ জানানো হয়েছে, সরকার খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ করাতে বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চাইলে সরকারের পাশেই থাকবে তারা।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে খাদ্য সুরক্ষা বিলকে হাতিয়ার করে সর্বাত্মক প্রচারে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে বিলটি পাশ করাতে বদ্ধপরিকর সনিয়া-মনমোহন। বাজেট অধিবেশন কার্যত ভেস্তে যাওয়ায় কংগ্রেস এখন বিশেষ অধিবেশন ডেকে বিলটি পাশ করাতে মরিয়া।
কিন্তু সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করা কেন সম্ভব হচ্ছে না বিজেপির পক্ষে?
রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেরই বক্তব্য, সরাসরি বিলটির বিরোধিতা করা কোনও দলের পক্ষেই সম্ভব নয়। কেন না, বিলটির উদ্দেশ্যই হল দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গরিব মানুষকে খাদ্য সুরক্ষা দেওয়া। ফলে বিষয়টি এমনই সংবেদনশীল যে, চাইলেও সরকারের ওই পদক্ষেপের বিরোধিতা করা সম্ভব নয় কোনও দলের পক্ষে। বিজেপি বিলটির বিরোধিতা করলে তাদেরই জনবিরোধী দল হিসেবে প্রতিপন্ন করে পাল্টা প্রচারে নামবে কংগ্রেস।
ইতিমধ্যেই বাজেট অধিবেশন ভেস্তে যাওয়ার জন্য বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলিকে কাঠাগড়ায় দাঁড় করিয়েছে কংগ্রেস। এর পর যদি বিজেপি যদি খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ করানোর জন্য ডাকা বিশেষ অধিবেশনেও বাধা দেয়, সে ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রচারের হাতিয়ার পাবে কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশবাসীর প্রতি দায়বদ্ধতার প্রশ্নে বিজেপিকে নতুন করে কোণঠাসা করার সুযোগ পাবেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে কংগ্রেসকে এখন বাড়তি জমি ছাড়তে চাইছেন না সুষমা-রাজনাথরা। তাই গতকাল বিজেপির মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ ছত্তীসগঢ়ের অনুকরণে বিলটি সংশোধনের দাবি তুললেও আজ লোকসভার প্রধান বিরোধী দলনেত্রী সে সবের ধার দিয়ে যাননি। আজ সুষমা টুইট করে সরকারের ওই পদক্ষেপকে কার্যত স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে সরকার খাদ্য সুরক্ষা বিলটি পাশ করতে বিশেষ অধিবেশন বা অর্ডিন্যান্স জারি করার কথা ভাবছে। খাদ্য সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিল অর্ডিন্যান্স জারি করে চালু করাটা মোটেই কাম্য নয়। বরং সরকার যদি বিশেষ অধিবেশন ডাকে, তা হলে বিজেপি তার বিরোধিতা করবে না।” পাশাপাশি সরকারে উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, “জুলাই মাসে বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। সরকার চাইলে সেই অধিবেশনের সময় এগিয়ে আনতে পারে।”
আগামী ৭ জুন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে চলছে সরকার। ওই বৈঠকেই ঠিক হবে, খাদ্য সুরক্ষা বিলটি পাশ করাতে অর্ডিন্যান্স জারি করা হবে না কি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, অর্ডিন্যান্সই হোক বা বিশেষ অধিবেশন, সরকার জনগণকে খাদ্য সুরক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর। বিষয়টি আর ফেলে রাখা হবে না। ওই বিলটিকে সামনে রেখেই লোকসভা ভোটের প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। দল মনে করছে, ওই আইনের সুফল পেতে গেলে কম পক্ষে এক বছর সময় দরকার। তাই গত বাজেট অধিবেশনেই বিলটি পাশ করানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন ইউপিএ নেতৃত্ব। কিন্তু একাধিক দুর্নীতির প্রতিবাদ করে সে সময় সংসদ অচল করে দেয় বিজেপি।
এই পরিস্থিতিতে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে কোর গ্রুপের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বাদল অধিবেশনের আগেই ওই বিলটি পাশ করাতে স্বল্প সময়ের জন্য একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে। বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে অর্ডিন্যান্স জারি করে বিলটি কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে কংগ্রেসের একাংশের। তবে দল জানিয়েছে, প্রথমে আগামিকালের ইউপিএ সমন্বয় কমিটির বৈঠক ও সেই আলোচনার ভিত্তিতে ৭ জুনের সর্বদলীয় বৈঠকের ফলাফল দেখেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.