কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন
মমতাদের আপত্তি মেনেই এনসিটিসি প্রস্তাব পেশ আজ
লোকসভা নির্বাচনের এক বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-নীতীশকুমারদের সঙ্গে আর নতুন করে সংঘাতে যেতে চাইছে না মনমোহন সরকার। তাই আঞ্চলিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের আপত্তি মেনে জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সুর নরম করছে। এনসিটিসি-র যে সব ‘বিতর্কিত’ ক্ষমতা সম্পর্কে বিভিন্ন রাজ্যের আপত্তি, বাদ পড়ছে সেগুলো। এবং আগামিকাল অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে এনসিটিসি সংক্রান্ত যে নতুন প্রস্তাব পেশ করতে চলেছেন, তাতে এই আপসেরই প্রতিফলন দেখা যাবে বলে মন্ত্রক-সূত্রের ইঙ্গিত।
কী রকম?
সূত্রের খবর: প্রস্তাবে বলা হবে, এনসিটিসি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অধীনে থাকবে না। কোনও রাজ্যে স্বাধীন অভিযান চালিয়ে কাউকে গ্রেফতার বা আটকের ক্ষমতাও তার হাতে দেওয়া হচ্ছে না। মূলত এই দু’টি বিষয়েই জোরালো আপত্তি তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-নীতীশকুমার-নবীন পট্টনায়করা। যার প্রেক্ষাপটে এ বার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রস্তাব: এনসিটিসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে কাউকে গ্রেফতার বা তল্লাশির দরকার পড়লে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশকে সঙ্গে নিয়েই তা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ডাকা সম্মেলনে কেন্দ্রের তরফে আঞ্চলিক দলের মুখ্যমন্ত্রীদের ও ভাবে ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হলেও আগামিকালের বৈঠকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা হাজির থাকবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ: এ জাতীয় সম্মেলন নিছক রীতিমাফিক অনুষ্ঠানে পর্যবসিত হয়েছে, সেখানে কাজের কাজ কিছু হয় না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আসছেন না। যদিও তাঁর তরফে এমন কোনও অভিযোগ তোলা হয়নি। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
কিন্তু কেন্দ্র যে ভাবে এনসিটিসি-র ক্ষমতা লঘু করে দিচ্ছে, তাতে তার কার্যকারিতা কতটুকু থাকবে?
প্রশ্নটা উঠছে, কারণ নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী এনসিটিসি-র কাজ হবে শুধু আন্তঃরাজ্য গোয়েন্দা সহায়তা দল (ইন্টার স্টেট ইন্টেলিজেন্স সাপোর্ট টিম) তৈরি করা। অর্থাৎ বর্তমানে সন্ত্রাসবাদীদের গতিবিধি সংক্রান্ত গোয়েন্দা-তথ্য আদান-প্রদানের যে কাজটা মাল্টি এজেন্সি সেন্টার (ম্যাক) করে থাকে, তা-ই। এনসিটিসি-র প্রধান হবেন ডিজি পদমর্যাদার এক অফিসার। সংস্থা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে একটি স্থায়ী পরিষদ, যেখানে এনসিটিসি-র কর্তারা ছাড়াও র, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, সেনা-গোয়েন্দার প্রতিনিধি এবং সাতটি রাজ্যের ডিজি-রা থাকবেন। দু’বছর অন্তর ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সাতটি রাজ্যকে পরিষদে জায়গা দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন পি চিদম্বরমের পরিকল্পনা অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। তিনি চেয়েছিলেন, সন্ত্রাসদমনে এমন একটি সংস্থা তৈরি হোক, যারা সন্ত্রাস-হামলা ঠেকাতে যেমন গোয়েন্দা-তথ্য লেনদেন করবে, তেমন অভিযান চালাবে, নাশকতার তদন্তও করবে। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে এনএসজি’র মতো বিশেষ বাহিনী কিংবা এনআইএ সবই এর আওতায় চলে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর যুক্তিতে কিছু মুখ্যমন্ত্রী আপত্তি তোলায় পরিকল্পনাটি হোঁচট খায়। শিন্দে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বে আসার পর থেকেই এ প্রসঙ্গে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন।
কালকের বৈঠকে শেষমেশ পর্যন্ত তা-ই হতে চলেছে। পাশাপাশি আইপিএসের আদলে গোয়েন্দাদের জন্য স্বতন্ত্র ক্যাডার চালুর বিষয়েও মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত জানতে চাইবে দিল্লি। পাঁচ বছর আগে প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চিদম্বরমও প্রস্তাবের পক্ষে ছিলেন। কাল সন্ধ্যায় মাওবাদী সমস্যা নিয়ে ন’টি রাজ্যের প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে মাওবাদী অধ্যুষিত ওই ন’টি রাজ্যের ২,১৯৯টি জায়গায় মোবাইল টাওয়ার বসানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মাওবাদী মোকাবিলার কৌশল সম্পর্কে ঐকমত্য গড়তে ১০ জুন সর্বদলীয় বৈঠকেরও ডাক দিয়েছে কেন্দ্র।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.