নজরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়
চার বছরের পাঠ্যক্রম খতিয়ে দেখছে ইউজিসি
লতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু করতে চলেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু একাধিক মহল এখনও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব। তাই নতুন ওই পাঠ্যক্রমের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশে আজ পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়ল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কমিটি তাদের সুপারিশ ইউজিসির কাছে জমা দেবে। যার ভিত্তিতে দিল্লির ধাঁচে অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েও চার বছরের পাঠ্যক্রম শুরু করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখবে ইউজিসি।
মন্ত্রক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই চার বছরের পাঠ্যক্রম চালু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও প্রেসিডেন্সির উপাচার্য মালবিকা সরকার মঙ্গলবার বলেন, “তিন বছরের স্নাতক ও দুই বছরের স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমের বদল ঘটানোর কোনও পরিকল্পনা আমাদের আপাতত নেই।” এ রাজ্যের প্রবীণ শিক্ষকদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে নানা মত রয়েছে। তবে তাঁরা কেউই আলোচনা ছাড়া এই পরিবর্তন কার্যকর করার পক্ষপাতী নন। আইআইএমের অনুপ সিংহ যেমন বলেন, “শিক্ষক হিসেবে আমি কোনও পরিবর্তনের বিরোধী নই। কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। সকলের মতামত না নিয়ে এ ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।” অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে আমি চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রমের বিরোধী। এতে ধনী পরিবারগুলির মুষ্টিমেয় ছাত্রছাত্রীই উপকৃত হবেন বলে মনে হয়। তবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত অনেকে সমর্থন করেন, সেটাও আমি জানি। সব দিক আলোচনা করেই যা করার করা উচিত।”
ইউজিসির মতে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের যথাযথ রূপায়ণ হচ্ছে কি না, তা নজরদারির প্রয়োজন আছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে ইউজিসি-কে সময়ে সময়ে রিপোর্ট ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য তাই পাঁচ সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে। ওই কমিটির মূল কাজ হল, নতুন পাঠ্যক্রম রূপায়ণের পরে তার অগ্রগতি সম্বন্ধে ইউজিসিকে সময়ে সময়ে অবহিত করা। প্রয়োজনে কোনও পরিবর্তনের বিষয়ে নির্দিষ্ট ভাবে সুপারিশ করা। দিল্লির ধাঁচে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও ওই পাঠ্যক্রম চালু করতে পারে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে কমিটি। মঙ্গলবার একটি নির্দেশিকা জারি করে ইউজিসি জানিয়েছে, তাদের আইন মোতাবেক পঠনপাঠনের মান বাড়ানোর জন্য যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়কে বিভিন্ন পদ্ধতি সুপারিশ করতে পারে তারা। সেই সব পদ্ধতি কী করে কার্যকর হবে, তা-ও বলতে পারে।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বড় মাপের সংস্কার প্রয়োজন বলে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব শিক্ষাবিদেরা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, সেই দাবির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সামগ্রিক ভাবে পাঠ্যক্রমের সংস্কার ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতেই এই শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকে চার বছরের পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বিদেশে পঠনপাঠনে সুবিধা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত। তবে দুই ও তিন বছরের মাথায় পাঠ্যক্রম ছেড়ে দেওয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধীনস্থ লেডি শ্রীরাম, সেন্ট স্টিফেন্স, হংস রাজের মতো প্রথম সারির কলেজগুলির বেশ কিছু বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ইতিমধ্যেই ওই পাঠ্যক্রমের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন বাম নেতৃত্ব। বিভিন্ন মহলে একে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছ থেকে নতুন পাঠ্যক্রমের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠান।
মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “ওই পাঠ্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে খোদ মন্ত্রকের ভিতরেই। তাই ধোঁয়াশা কাটাতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।” নবগঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিতে আছেন, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবীণ শিক্ষকেরা।
কমিটির অন্যতম সদস্য, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজের প্রাক্তন অধিকর্তা ভুবন চান্ডেল জানান, রিভিউ কমিটি গড়ার খবর তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, “আশা করি ইউজিসি শীঘ্রই কমিটির কথা জানাবে। তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.