গঙ্গা ভাঙন রোধের কাজে পাথর সরবরাহের বরাত নিয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে সর্ংঘষে তিনজনের মৃত্যুর পর বৈষ্ণবনগরের লক্ষীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিহারিটোলা এবং আতারটোলা গ্রামেই উত্তেজনা রয়েছে। বাসিন্দাদের অনেকের আশঙ্কা, দুটি গ্রাম পুরুষশূন্য হলেও যে কোন মুহূর্তে ফের গোলমাল হতে পারে। সেই আশঙ্কায় দুই গ্রামের মাঝামাধি পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। গত শনিবার সর্ংঘষের পর দু’পক্ষই অভিযোগ করে। পুলিশ ১৭ জনকে আটক করলেও দুইটি মামলায় দু’দলের দু’জন সৌকত আলি, ইদ্রিশ আলিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “১৫ জনকে জেলা করা হচ্ছে। দুটি গ্রামে পুলিশ তল্লাশি চলছে।”
গোলমাল মিটিয়ে ভাঙন রোধের কাজ শুরু করতে জেলাশাসক আজ, সোমবার বেলা ১১টায় সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে বিধায়ক, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পুলিশ-প্রশাসনিক আধিকারিক উপস্থিত থাকবেন। জেলা শাসক কিরণ কুমার গোদালা বলেন, “আলোচনায় সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হচ্ছি। সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকের পর এলাকায় ভাঙনরোধের কাজ করা হবে। বৈঠকে ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষকেও ডাকা হয়েছে।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, লক্ষীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গা নদী তীরবর্তী এলাকার ভাঙন রুখতে চলতি বছর বিহারিটোলা থেকে আতারটোলা প্রায় ৮০০ মিটার কাজের জন্য প্রায় ৭ কোটি টাকার টেন্ডার করেছিল ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। কাজের বরাত পেয়েছিল তিন জন ঠিকাদার। তারা কাজে গেলে বিহারিটোলা গ্রামের কংগ্রেস সমর্থকরা ও আতারটোলার তৃণমূল সমর্থকরা পাথর সরবরাহ এবং শ্রমিক সরবরাহের দায়িত্ব তাঁদের দিতে হবে বলে দাবি জানান। বিবাদে কাজ শুরু হয়নি। বৈষ্ণবনগরের দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকও করে। গত শনিবার বিহারিটোলার কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা ভাঙনরোধের কাজে রাজমহল থেকে পাথর আনার জন্য চেষ্টা শুরু করতেই তৃণমূল বাধা দেয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তির, বোমা, গুলির লড়াই হয়। তৃণমূলের দু’জন ও কংগ্রেসের এক জন মারা যান। বৈষ্ণবনগরের কংগ্রেস বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরী বলেন, “পুলিশ নিরপেক্ষ কাজ করলে এমন ঘটনা ঘটত না। তৃণমূলের জন্যই গোলমাল হয়।” তৃণমূল জেলা সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেছেন, “নিজের মাটি ধরে রাখার জন্য কংগ্রেস তৃণমূলের উপর হামলা চালাচ্ছে। তল্লাশি জারি রাখতে বলেছি। নেতাকর্মীকে সংযত থাকতে বলেছি।”
|