কষ্ট হলেও মুখ বুঝে থাকতে হবে। কোনও উপায় নেই। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হলেও উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় বার হয়ে প্রয়োজনে দাঁতে দাঁত চেপে প্রকৃতির ডাক উপেক্ষা করতে হয় বালিকা থেকে প্রবীণা, সব বয়সের মেয়েদেরই। বালুরঘাট, মালদহ, রায়গঞ্জ কিংবা শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোনও শহরেই মহিলাদের জন্য সুলভ শৌচালয় চোখে পড়ে না। এনজেপি থেকে দার্জিলিং, দীর্ঘ পথে রোজই দেশ-বিদেশের হাজার-হাজার পর্যটক যাতায়াত করেন। ওই পথে একটিও সুলভ শৌচালয় দেখা যায় না। ওই পথে যাতায়াতে চোখে পড়ে পুরুষদের অনেকেই উন্মুক্ত শৌচাগার হিসেবে পাহাড়ির রাস্তার কিনারা ব্যবহার করছেন। কিন্তু, মহিলারা নিরুপায়। অগত্যা দীর্ঘ পাহাড়ি পথে নানা সমস্যায় পড়তে হয় মহিলাদের।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ি পথে বহুবার যাতায়াত করেছেন। প্রায় এক দু’মাস পর পরই তিনি দার্জিলিঙে যান। ওই রাস্তায় মেয়েদের জন্য পৃথক সুলভ শৌচালয় না-থাকার বিষয়টি নিয়ে তিনিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে সে কথা জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু, আজও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর মহিলাদের জন্য একটিও সুলভ শৌচালয় করতে পারেনি। এমন নয় যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের হাতে টাকা নেই। কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেই সুলভ শৌচালয় হতে পারে। অথচ তা হচ্ছে না কেন? এই ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, এলাকার পুর কর্তৃপক্ষ, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কর্তা, সকলের সঙ্গে কথা বলে কাজটা করতে হচ্ছে। সে জন্য সময় লাগছে।”
শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি এই ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের পথে কোথাও চোখে পড়বে না মহিলাদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা। একই অবস্থা জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার যাতায়াতের পথে। মহিলাদের জন্য কোন শৌচাগার নেই শিলিগুড়ি থেকে ইসলামপুর যাতায়াতের পথেও। একই অবস্থা চোখে পড়বে পাহাড়ের পথে যাতায়াতের পথে। এই পথেই রোজ যাতায়াত করে কয়েক হাজার মহিলা। আর রোজই হয়ত এই সমস্যায় পড়তে হয় মহিলাদের। শুধু মহিলারা নয় ছোট মেয়েদেরও এই অসুবিধের মুখে পড়তে হয়। শুধু যাতায়াতের পথে নয় মহিলাদের জন্য কোনও শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই বাসস্ট্যান্ড গুলিতেও। শুধুমাত্র নিত্যযাত্রীদের এই সমস্যায় পড়তে হয় তা নয়,দূরদূরান্তে থেকে আসা যাত্রীদের অভিজ্ঞতাও একই। এই রাস্তা দিয়ে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ। কিন্তু এই দীর্ঘপথে মহিলাদের জন্য নেই কোনও শৌচালয়ের ব্যবস্থা। আর সাধারণ যাত্রীদের পাশারাশি অসুবিধেয় পড়তে হয় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলি থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করতে আসা রোগীদের। রোজই কোচবিহার বা রায়গঞ্জ থেকে রোগীরা আসেন শিলিগুড়িতে। ওই পথেও এক ভোগান্তি।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর কতাছে দলের মহিলাদের পক্ষ থেকেও ওই সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। মন্ত্রী বলেছেন, “শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি যাতায়াতের পথে ফাটাপুকুর, তালমা সহ অন্যান্য কয়েকটি জায়গায় মহিলাদের জন্য সুলভ শৌচাগার তৈরি করার পরিকল্পনার কাজ এগিয়েছে।”
|