শিক্ষকদের পঞ্চায়েত ভোটের কাজে লাগাতে প্রশাসনের নির্দেশে কোপ পড়ল স্কুলগুলির গরমের ছুটিতে। দুই দফায় কোচবিহারে হাইস্কুলে গরমের ছুটির নির্দেশিকা বদল করে প্রশাসন। ভোটকর্মীর দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগপত্র পৌঁছনোর কথা ভেবে ৮ জুন পর্যন্ত হাইস্কুল খোলা রাখতে হবে বলে বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে নির্দেশ পাঠান জেলাশাসক। গত মাসে পাঠানো নির্দেশ বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গত শুক্রবার ওই নির্দেশিকা বদল করে ১৭ জুন থেকে হাইস্কুলগুলি খোলা রাখতে হবে বলে জানানো হয়েছে। কবে গ্রীষ্মে ছুটি শুরু তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে স্কুল কতৃর্পক্ষ।
ঘনঘন নির্দেশ বদল নিয়ে জেলার ডান বাম দুই শিক্ষক শিবিরেই ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “নির্বাচনের কাজের জন্য তালিকাভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগপত্র পৌঁছনোর জন্য বাড়তি সময় প্রয়োজন। গরমের ছুটি চলাকালীন শিক্ষকদের যাতে প্রশিক্ষণে আসতে না হয় সে সব দিক খতিয়ে দেখে পরে সিদ্ধান্ত হয়।”
কোচবিহারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২২৮৫টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে। এ জন্য অন্তত ১২ হাজার কর্মী প্রয়োজন। ভোটকর্মীর বড় অংশই স্কুল শিক্ষক বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সে কারণেই ওই শিক্ষকদের আগামী ৭ জুনের মধ্যে স্কুলের মাধ্যমে নিয়োগপত্র পাঠানোর কথা ভেবে আগামী ৮ জুন পর্যন্ত কোনও স্কুল যাতে গরমের ছুটি ঘোষণা না করে সেই নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল। বিভিন্ন স্কুলে গরমের ছুটি পিছিয়ে দেওয়া হয়। যদিও শুক্রবার আচমকা নির্দেশ বদলে স্কুলগুলিকে আগামী ১৭ জুন থেকে স্কুল খোলার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ২২ ও ২৩ জুন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তৃণমূল প্রভাবিত মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কোচবিহার জেলা আহ্বায়ক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “যে শিক্ষকরা জেলার বাইরে থাকেন, গরমের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।” নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “ছুটির নির্দেশিকা বদল হওয়ায় বেশির ভাগ স্কুলে গরমের ছুটির দিন সংখ্যাও কমেছে। এতে পরীক্ষা থেকে পঠনপাঠন সব বিঘ্নিত হবে।” তুফানগঞ্জ নাটাবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত সেন বলেন, “বর্ষপঞ্জি মেনে স্কুলচালনায় সমস্যা হচ্ছে।” কোচবিহারের বাণেশ্বর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ ভৌমিক বলেছেন, “একাদশে ভর্তি থেকে উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্টের মত কাজে জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে।”
|
উদয়নকে পুলিশে যেতে বললেন গৌতম
নিজস্ব সংবাদদাতা • দিনহাটা |
খুনের হুমকির অভিযোগ তোলায় ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহকে পুলিশে অভিযোগ জানাবার পরামর্শ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। রবিবার দিনহাটার বুড়িরহাট ও নয়ারহাটে দুটি জনসভায় যোগ দেন তিনি। তার আগে গৌতমবাবু বলেন, “উদয়নবাবুকে হুমকি দেওয়া হলে উনি পুলিশে জানান। প্রযুক্তির যুগে কেউ টেলিফোন করে থাকলে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। কারা তা করছে সেটাও পুলিশ জানতে পারবে।” গত ৩০ মে দিনহাটার বুড়িরহাটে তৃণমূলের সন্ত্রাস ও অবাধ পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবিতে বামফ্রন্টের ডাকা সভায় তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন উদয়নবাবু। পাশাপাশি, মন্ত্রীর কটাক্ষ, “কিছুদিন আগেও দিনহাটার বিধায়ক বলতেন, দিনহাটার কাঁচা লঙ্কাও নাকি সবুজ হয় না। এখন কি এমন হল যে উনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পায়ের তলায় মাটি সরতে থাকায় উনি এই সব বলছেন।” এদিন দুটি সভাতেই বামেদের বিরুদ্ধে পাল্টা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হন গৌতমবাবু। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষও উদয়নবাবুর কড়া সমালোচনা করেন। তৃণমূলের কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিয়েছেন উদয়নবাবু। তিনি বলেন, “আমি লঙ্কার উদাহরণ টেনে কিছু বলিনি। তেমন সবুজ বুদ্ধিও আমার নেই। অবাধ ভোট হলে দিনহাটার কাঁচা লঙ্কার রঙ কেমন ঝাল তা তৃণমূল টের পাবে।” তবে খুনের হুমকি প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক। |