এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানার মধুপুর এলাকায়। ওই ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্য আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ জানায়, গুলিবিদ্ধ ওই ব্যবসায়ীর নাম হরিপদ ঘোষ। তাঁর বাড়ি রায়গঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শক্তিনগর এলাকায়। তিনি মুরগির ব্যবসায়ী। রায়গঞ্জের বারোদুয়ারি এলাকায় তাঁর পোলট্রি ফার্ম রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর বাঁ পায়ে এবং পিঠে গুলি লেগেছে। এদিন ওই ব্যবসায়ী বারোদুয়ারি হাট থেকে কারবার সেরে টাকা নিয়ে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ওই ব্যবসায়ীর চিৎকার শুনে বাসিন্দারা ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “দুষ্কৃতীরা টাকা ছিনতাই করার জন্যই ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করে। বাসিন্দারা টের পেয়ে যাওয়ায় দুষ্কৃতীরা পালায়।” দুষ্কৃতীরা ওই ব্যবসায়ীকে অনুসরণ করছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ দুষ্কৃতীদের খুঁজছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিপদবাবু রায়গঞ্জের বিভিন্ন হাটে মুরগি সরবরাহ করেন। এদিন তিনি বারোদুয়ারি হাটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মুরগি বিক্রির প্রায় দেড় লক্ষ টাকা তুলে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, সেই সময় মধুপুর এলাকার একটি চিড়ামিলের সামনে ৩ জন দুষ্কৃতী পিছন থেকে একটি বাইকে চেপে এসে হরিপদবাবুকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু হরিপদবাবু বাইকের গতি বাড়িয়ে দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে তিন রাউন্ডগুলি চালায় বলে অভিযোগ। দুটি গুলি তাঁর শরীরে লাগে। এরপর হরিপদবাবু বাইক ফেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক বাসিন্দার বাড়ির সামনে গিয়ে চিৎকার শুরু করেন। তা শুনে বাসিন্দারা বেরিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। বাসিন্দারাই এরপর হরিপদবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে পুলিশে খবর দেন। হরিপদবাবুর টাকা, মোবাইল ফোন, বাইক বাসিন্দারা তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেন।
রাতেই হাসপাতালে গিয়ে হরিপদবাবুর সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা, রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক-সহ জেলা অনেক পুলিশ কর্তাই। হাসপাতালে যান রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্ত। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
হরিপদবাবুর স্ত্রী ফুলুদেবী জানান, স্বামীর কাছে ব্যবসার টাকা ছিল। ওই টাকা ছিনতাইয়ের জন্য দৃষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাসিন্দাদের তরফে পুলিশ সুপারের কাছে অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার দাবি জানানো হয়েছে। পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত সোম এবং রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “জেলার কয়েক হাজার ব্যবসায়ী প্রতিদিনই বিভিন্ন হাটে কারবারে যান। এই ঘটনার জেরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা না হলে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” |