|
|
|
|
বায়ার্নকে ত্রিমুকুট দিয়ে বিয়ার-স্নানে বিদায় হেইনকেসের
নিজস্ব প্রতিবেদন
বায়ার্ন মিউনিখ-৩ (মুলার-পেনাল্টি, গোমেজ-২)
স্টুটগার্ট-২ (হার্নিক-২) |
‘আইন, সোয়েই, দ্রেই’।
যে জার্মান শব্দের বাংলা অর্থ হল, এক-দুই-তিন।
এই তিন শব্দের ব্যানারেই শনিবার রাতে ভরে গিয়েছিল বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়াম। ‘মেইস্টার মেইস্টার’ বলে সমর্থকদের চিৎকারের মধ্যে শুধুমাত্র জার্মান কাপ জেতা না, ছিল ইতিহাস গড়ার উচ্ছ্বাস। স্টুটগার্টকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে ত্রিমুকুট ক্লাবের সপ্তম সদস্য হল জুপ হেইনকেসের বায়ার্ন মিউনিখ। জার্মানির ক্লাব হিসাবে অবশ্যই প্রথম। ২০১২-’১৩ মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বুন্দেশলিগা জেতা ছাড়াও বায়ার্নের ট্রফি ক্যাবিনেটে চলে এল জার্মান কাপ। তিনে তিন। |
বায়ার্ন-পার্টি। |
শনিবার রাতে ব্রাজিলীয় সেন্টার ব্যাক দাতে না থাকায় বোয়াতেং ও ফান বিউটেনকে রক্ষণে রেখেই প্রথম দল সাজাতে বাধ্য হন বায়ার্ন কোচ হেইনকেস। আর আক্রমণে রবেন-রিবেরি জুটির সঙ্গে স্টুটগার্টেরই প্রাক্তন স্ট্রাইকার মারিও গোমেজকে রেখেছিল ইউরোপ সেরা ক্লাব বায়ার্ন। প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করে বায়ার্নকে এগিয়ে রাখেন টমাস মুলার। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মারিও গোমেজের জোড়া গোলের সৌজন্যে ম্যাচ একতরফা লড়াইয়ে পরিণত হয়। বায়ার্ন ৩-০ এগিয়ে যাওয়ায়। হয়তো হেইনকেসের ছেলেরাও আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিলেন। যার সুযোগে ম্যাচের শেষের দিকে মার্টিন হার্নিক পরপর দু’গোল বায়ার্নের জালে ঢুকিয়ে আচমকা ফাইনালকে জমিয়ে তোলেন। তবে স্টুটগার্টের শেষরক্ষা হয়নি। হার্নিকরা পারেননি ২০০৫ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে লিভারপুলের মতো কোনও অবিশ্বাস্য কামব্যাক ঘটাতে। |
দলবল নিয়ে ডিনারে চললেন হেইনকেস। |
ত্রিমুকুটের সামনে বান্ধবীর সঙ্গে রবেনের পোজ। |
|
জার্মান কাপ ইতিহাসে ১৬তম খেতাব জিতে বায়ার্ন মিডফিল্ডার সোয়াইনস্টাইগার বলেন, “গত মরসুমেও আমরা খুব ভাল খেলেছিলাম। কিন্তু ট্রফি জিততে পারিনি। অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে এই মরসুমে ত্রিমুকুট জিতলাম।” এমন চিরস্মরণীয় দিনেও কিন্তু সোয়াইনস্টাইগারদের কোচকে বিদায়ের পালা ছিল! এবং যে কোনও ফুটবলপ্রেমীর গায়ে শিহরণ জাগানোর মতো দৃশ্য সৃষ্টি করে বায়ার্ন ফুটবলাররা হেইনকেসকে বিদায় জানালেন আক্ষরিক অর্থেই পায়ে পড়ে! বায়ার্নকে ত্রিমুকুট দিয়েও হেইনকেস শোনা যাচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রেনাল্ডোর দল রিয়াল মাদ্রিদ-মুখী। বায়ার্ন সমর্থকদের ‘জুপ জুপ জুপ’ চিৎকারের মধ্যে যেন লুকিয়ে ছিল অসহায় আর্তনাদ যে, কোচ আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না! |
রুমেনিগে-বেকেনবাউয়ারের আড্ডা। |
হেইনকেস অবশ্য বলছেন, “আমি খুব খুশি। এ রকম মুহূর্ত আমি জীবনে কোনও দিন আর উপভোগ করতে পারব কি না জানি না।” বিদায়ী কোচের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বায়ার্নের স্পোর্টিং ডিরেক্টর ম্যাথিয়াস সামার বলেছেন, “হেইনকেসের জন্যই এ মরসুমে ত্রিমুকুট সম্ভব হয়েছে।” তাঁর কোচিং-ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হেইনকেস আগামী মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করতে পারেন। শনিবারের রাত অবশ্য তাঁর শেষ হয় বায়ার্ন ফুটবলারদের হাতে বিয়ার-স্নানে। বায়ার্ন কিংবদন্তি রুমেনিগে হয়তো সে জন্যই বলেছেন, “হেইনকেস মরসুমের একমাত্র ভুলটা আজই করল। একটাই জামা পরে এসে!” |
ইউরোপের ত্রিমুকুট জয়ীরা |
• সেল্টিক (স্কটল্যান্ড) ১৯৬৭ প্রথম ডিভিশন লিগ, স্কটিশ কাপ, ইউরোপিয়ান কাপ
• আয়াখস (নেদারল্যান্ডস) ১৯৭২ ডাচ লিগ, ডাচ কাপ, ইউরোপিয়ান কাপ
• পিএসভি আইন্দোভেন (নেদারল্যান্ডস) ১৯৮৮ ডাচ লিগ, ডাচ কাপ, ইউরোপিয়ান কাপ
• ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড (ইংল্যান্ড) ১৯৯৯ প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
• বার্সেলোনা (স্পেন) ২০০৯ লা লিগা, স্প্যানিশ কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
• ইন্টার মিলান (ইতালি) ২০১০ সেরি এ, ইতালিয়ান কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
• বায়ার্ন মিউনিখ (জার্মানি) ২০১৩ বুন্দেশলিগা, জার্মান কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ |
|
ছবি: রয়টার্স ,এএফপি |
পুরনো খবর: বায়ার্নের সামনে আজ ইতিহাস গড়ার হাতছানি |
|
|
|
|
|