করিম বেঞ্চারিফাকেই পরের মরসুমে কোচ রাখতে চাইছে মোহনবাগান। মরক্কান কোচের উপর শনিবার পূর্ণ আস্থা রাখল সবুজ-মেরুন কর্মসমিতি। শুধু তাই নয়, সভার সিদ্ধান্ত কোচের পরামর্শ মেনেই নেওয়া হবে চতুর্থ বিদেশি। অর্থাৎ, টোলগের বিকল্পকে।
কিন্তু করিম কি মোহনবাগানের দেওয়া আর্থিক শর্তে রাজি হবেন?
ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র বলছেন, “উনি আমাদের আর্থিক সমস্যাটা বুঝেছেন। আশা করছি আলোচনায় সব মিটে যাবে।” ক্লাব সূত্রের খবর, মেলে ক্লাবের ‘প্যাকেজ’-এর প্রস্তাব পাওয়ার পর নিজের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন এই মুহূর্তে ভারতের বাইরে থাকা করিম। তিনি পাল্টা মেল পাঠিয়ে জানিয়েও দিয়েছেন, সচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। রবিবারই সেই ‘আলোচনা’ হতে পারে মেল চালাচালি কিংবা ‘নেট চ্যাট’-এর মাধ্যমে।
শনিবার বিকেলে বাগান তাঁবুতে কর্মসমিতির সভায় মূলত তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়।
এক) করিমকে কোচ রাখা হবে কি না?
দুই) কত টাকায় টিম হবে? সদস্যারা কে কত টাকা দেবেন?
তিন) ওডাফা-ইচে সহ অন্য ফুটবলারদের ক্ষেত্রে কী হবে? |
টোলগেকে মহমেডান রাতারাতি সই করিয়ে নেওয়ায় কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে বাগান। করিম প্রসঙ্গ ওঠামাত্র এ দিন সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসু, ফুটবল সচিব উত্তম সাহা-সহ কর্মসমিতির প্রায় সব সদস্যই বলে ওঠেন, “করিমকে বদলালে দলের ভারসাম্য নষ্ট হবে। করিমের সঙ্গে সচিব কথা বলে তাঁকে রাখার ব্যবস্থা করুন।” এর পর ফুটবলারদের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। নির্মল-নবি-স্নেহাশিস-সহ জাতীয় দলের ফুটবলারদের চুক্তি নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। তবে সভায় জানানো হয়, ওডাফা-ইচে টাকা কমাতে রাজি আছেন। সমস্যা নেই। কাতসুমির সঙ্গেও চুক্তি হয়ে আছে। তখনই ওঠে চতুর্থ বিদেশির প্রসঙ্গ। ঠিক হয়, করিমের উপরই দায়িত্ব দেওয়া হবে শেষ বিদেশি বাছার। তবে তাড়াহুড়ো করা হবে না। বাজেটে বাড়তি টাকা থাকলে দামি বিদেশি আনা হবে। বিদেশি নিয়ে কর্তারা ভাবনা-চিন্তা করলেও দেশীয় ফুটবলারদের নিয়ে বাগান কর্তারা চিন্তিত নন। সচিব বললেন, “বিদেশিরাই পার্থক্য গড়ে দেয়। ভারতীয়দের ফারাক উনিশ-বিশ। আমরা প্রত্যেককেই নির্দিষ্ট টাকার প্রস্তাব দেব। যদি তারা থাকে, ভাল। অন্য ক্লাবে যেতে চাইলে ছেড়ে দেব।”
করিম নতুন মরসুমের জন্য যে ফুটবলার-তালিকা কর্তাদের কাছে জমা দিয়েছেন সেটা করতে হলে ১৮ কোটি টাকা লাগত। কিন্তু মোহনবাগান টিম গড়ছে দশ কোটির। ময়দানে যা কখনও হয়নি সেটাই এ দিন বলে দেন অঞ্জন। প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন, স্পনসর ইউ বি যে ১০ কোটি টাকা দিচ্ছে তার মধ্যে আট কোটি টাকা ব্যয় হবে দল গড়তে। বাকি টাকা ক্লাবের ইউথ ডেভেলপমেন্ট ও পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় হবে। দল গড়তে এক কোটি টাকা দেবেন প্রেসিডেন্ট টুটু বসু। কর্মসমিতির সদস্যরা তুলে দেবেন এক কোটি টাকা।
জানা গিয়েছে, সভায় যা প্রতিশ্রুতি মিলেছে তাতে দু’কোটিও উঠতে পারে সদস্যদের কাছ থেকে। বাড়তি টাকা ব্যয় হবে চতুর্থ বিদেশির জন্য। সহ-সচিব বললেন, “গত মরসুমে টিমের ব্যর্থতার জন্য কেউ একা দায়ী নয়। এ বারের টিম আরও ভাল করার চেষ্টা হচ্ছে।”
টোলগেকে যে বাজেট কমার কারণে ছাঁটাই করা হয়েছে মানতে রাজি নন ক্লাব সচিব। “পারফরম্যান্সের জন্যই ও বাদ পড়েছে। আমাদের কথা না শুনে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ত্রোপচার করিয়েছিল। নিজেকে ফিট রাখতে পারেনি। সে জন্যই বাদ গিয়েছে,” বলে দিলেন অঞ্জন।
|