তদন্তে প্রমাণিত, নকশার গলদেই ভেঙেছে উড়ালপুল
ল্টোডাঙা উড়ালপুল ভেঙে পড়ার তিন মাস বাদে প্রশাসনিক কমিটির রিপোর্টে মেনে নেওয়া হল বেয়ারিং-বিভ্রাটের তত্ত্বই। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও শনিবার বলেন, “কাস্তের মতো যে অংশটি উড়ালপুল থেকে খুলে পড়েছে, সেখানে বেয়ারিং বসাতে ভুল হয়েছিল।” ডান দিকে যে বেয়ারিং বসানোর কথা, তা বাঁ দিকে বসানো হয় আর বাঁ দিকেরটি ডান দিকে।
রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব দেবাশিস সেনের নেতৃত্বে গড়া পাঁচ সদস্যের কমিটি সপ্তাহ দুয়েক আগেই এ নিয়ে মহাকরণে রিপোর্ট জমা দেয়। নির্মাণে এই গলদ কেন, তা-ও জানিয়েছে প্রশাসনিক তথ্যানুসন্ধান কমিটি। কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে গড়া কমিটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও বৈঠক করে। কমিটির চেয়ারম্যান তথা নগরোন্নয়ন সচিব দেবাশিস সেন এ দিন বলেন, “উড়ালপুলের নকশায় ত্রুটি থাকায় বেয়ারিং বসাতে ভুল হয়। যে দিকে চাপ সামলানোর বেয়ারিং বসানোর কথা, সে দিকে চাপ ও টান সামলানোর বেয়ারিং বসে। উল্টো দিকে বসানো ছিল না টান সামলানোর বেয়ারিং।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেয়ারিং-বিভ্রাটই উড়ালপুল দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। দুর্ঘটনার দু’দিনের মধ্যে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনেও অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথার ভিত্তিতে দুর্ঘটনার এই কারণই উঠে আসে। তবে কাস্তের মতো বাঁকটিতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ বা ভারবাহী ট্রাকের যথেচ্ছ গতিবিধি সামলানোর ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল বলে মত ইঞ্জিনিয়ারদের। দেবাশিসবাবু বলেন, “নিরাপত্তা-বিধি অনুযায়ী, উড়ালপুলের বাঁক ৬১ ডিগ্রির মধ্যে থাকা উচিত। এ ক্ষেত্রে ছিল ৬০ ডিগ্রি। ফলে ওই অংশে গাড়ির গতি কম রাখা এবং ভারী মালবাহী লরি-ট্রাকের ওঠা বন্ধ রাখা উচিত ছিল।” ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, যে বাঁক নির্মাণে সব থেকে বেশি মনোযোগ দরকার ছিল, ভুল হয় সেখানেই। তাঁদের মতে, নকশায় ভুল থাকলেও সেতু নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে নজরদারি যথাযথ থাকলে ভুল এড়ানো যেত। একমত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। তাঁর কথায়, “ভবিষ্যতে ঝুঁকি এড়াতে নকশা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সব যাচাই করিয়েই ধীরেসুস্থে কাজ হবে।”
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ইঞ্জিনিয়ার-শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে গড়া বিশ্লেষক কমিটির রিপোর্ট তৈরিও শেষ পর্যায়ে। উড়ালপুলটির অক্ষত অংশের নিরাপত্তাও খতিয়ে দেখছে কমিটি। নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, খুলে-পড়া গার্ডারটির লোহা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা ৪৮ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। নতুন নক্শা তৈরি করে নির্মাণের জন্য দরপত্রও ডাকা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দিয়ে নির্মাণ সংক্রান্ত প্রস্তাব যাচাই করিয়ে সায় দেবে রাজ্য। খরচ পড়বে কম-বেশি ৭ লক্ষ টাকা। নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তার কথায়, “কম টাকার কাজে অনেক বড় সংস্থাই রাজি হচ্ছে না।” প্রথম বার দু’টি সংস্থা দরপত্র দেয়। কিন্তু অন্তত তিনটি সংস্থা দরপত্র জমা না দিলে প্রস্তাব গৃহীত হয় না। ফলে, ক’দিনের মধ্যেই নতুন করে দরপত্র বিলি হবে। মহাকরণের কর্তারা জানান, ২১ দিনের মধ্যে যা দরপত্র জমা পড়বে, তার ভিত্তিতেই অর্থ দফতরের অনুমোদন নিয়ে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। মন্ত্রীরও আশা, জুলাইয়ের গোড়াতেই বোঝা যাবে কবে উড়ালপুল সংস্কার সারা যাবে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.