স্বামী খুনে ছেলের সাক্ষ্যে যাবজ্জীবন
স্বামীকে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন হল স্ত্রী-র। মামলার ১২ সাক্ষীর অন্যতম ওই দম্পতির বছর আটেকের ছেলেও।
মালদহের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ (পঞ্চম) প্রবীরকুমার মিশ্র বৃহস্পতিবার এই সাজা ঘোষণা করার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন সাজাপ্রাপ্ত মমতা বালো। দাবি করেন, “আমি স্বামীকে খুন করিনি। মিথ্যা মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” মামলায় অভিযুক্ত অন্য এক যুবককে তথ্য প্রমাণের অভাবে রেহাই দিয়েছে আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের ফের মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিহতের পরিবার।
মালদহ শহরের প্রান্তপল্লির ভাড়াবাড়িতে স্ত্রী মমতা ও ছেলে পার্থকে নিয়ে থাকতেন স্কুলশিক্ষক সূযর্কান্ত বালো। তাঁর একটি পেট্রোল পাম্পও রয়েছে। ২০১১-র ১৪ মে সকালে শোওয়ার ঘর থেকে ওই শিক্ষকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আগের রাতে বাড়িতে ওই দম্পতি ও তাঁদের ছেলেই ছিলেন। নিহতের দাদা চন্দ্রকান্ত বালোর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মমতাদেবীকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ আরেক যুবককেও ধরে।
সূর্যকান্তবাবুর ছেলে আদালতে জানায়, ১৩ মে তার বাবার স্কুল ছুটি ছিল। সূর্যকান্তবাবু পেট্রল পাম্পে গিয়েছিলেন। রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি ফিরে তিনি বলেন, ‘শরীর ভাল নেই’। ওই বালকের কথায়, “খাওয়ার পরে মা’র দেওয়া ওষুধ খেয়ে বাবা শুয়ে পড়ে। রাত ১০টা নাগাদ কাকু (ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া যুবক) আসে। মা কাকুকে নিয়ে বাবার শোওয়ার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। আমি পড়ার ঘরেই শুয়ে পড়েছিলাম।” সে জানায়, সকালে সূর্যকান্তবাবুকে শোওয়ার ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর নাকে রক্ত জমে ছিল। বালিশের নীচেও রক্ত ছিল। মমতাদেবী বাড়িতে থাকলেও ওই যুবক ছিল না।
ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছিল ওই শিক্ষকের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পরেই পুলিশ ধৃত দু’জনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে চার্জশিট দেয়। ছেলে-সহ ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর বুধবার বিচারক খুনের অভিযোগে মমতা বালোকে দোষী সাব্যস্ত করেন। মৃতের ভাইপো নরেশ বালো বলেন, “কাকিমার সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। ওই দু’জন মিলে কাকাকে খুন করে। কাকিমার সাজা হওয়ায় আমরা খুশি। আমরা ওই ছেলেটির সাজার দাবিতে হাইকোর্টে যাব। ”
সরকারী আইনজীবী তীর্থ বসু জানান, ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পুলিশ দিতে পারেনি। তাই তিনি ছাড়া পেয়ে যান। মমতাদেবী ও ওই যুবকের আইনজীবী গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রত্যক্ষদর্শী না থাকলেও ঘরে স্ত্রী থাকাকালীন স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ায় আদালত স্ত্রীকে সাজা দিয়েছে এবং অভিযুক্ত যুবককে খালাস করে দিয়েছে। আমরা এই সাজা ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.