কেন্দ্রকেই দোষ মমতার
সাবধান করা হয়েছিল রাজ্যকে, জানাল সেবি
শ্চিমবঙ্গে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কারবার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় কার, তা নিয়ে নতুন করে চাপানউতোর শুরু হল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফে।
ওই ধরনের সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল সেবি-র তরফে। সংসদের অর্থ বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে শুক্রবার তা জানান সেবি-র চেয়ারম্যান ইউ কে সিন্হা। কিন্তু সেবি-সহ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সতর্কতা সত্ত্বেও কাজ হয়নি। দিল্লিতে যখন এই তথ্য পেশ হচ্ছে স্থায়ী কমিটিতে, রাজ্যে তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রশ্ন তুলেছেন অর্থলগ্নি সংস্থা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের আন্তরিকতা নিয়েই। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্যে লগ্নি সংস্থার কারবার বন্ধের জন্য তিন দিনের মধ্যে বিল করে কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য দিল্লিতে পাঠিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র বিলটি দেড় মাস ফেলে রেখেছে! আইনটা হলে চিট ফান্ড সংস্থাগুলির সম্পত্তি বিক্রি করে সেই টাকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের ফেরত দিতে পারি।” সারদা-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই সব সংস্থার কাজ সম্পর্কে আগে তাঁদের ধারণা ছিল না। সেই দাবিতেই প্রায় জল ঢালেন সেবি-কর্তা। পশ্চিমবঙ্গে সংস্থাগুলির কাজ নিয়ে এক বছরে ন’বার রাজ্যের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি, কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের বৈঠক হয়।
ন’বারই রাজ্যের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠির কথাও স্থায়ী কমিটিকে জানান সিন্হা।
আগে অর্থ মন্ত্রক, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরে এ দিন শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-কে ডেকে পাঠিয়েছিল স্থায়ী কমিটি। সেবি-র চেয়ারম্যানও স্বীকার করেছেন, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাঁদের ক্ষমতা সীমিত। তাঁর যুক্তি, কোনও সংস্থার দফতরে তল্লাশি, নথি আটক করা বা গ্রেফতারের ক্ষমতা তাঁদের নেই। কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেই তারা কোর্টে চলে যায়। ওই সংস্থাগুলির সম্পর্কে মানুষকে সাবধান করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হলে তারা আবার পাল্টা বিজ্ঞাপন দেয়! তবে তাঁদের দিক থেকে যে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করা হয়েছিল, তা জানাতে ভোলেননি সিন্হা।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বল ঠেলেছেন কেন্দ্রের কোর্টেই। হাওড়ায় উপনির্বাচনের শেষ লগ্নের প্রচারে গিয়ে সালকিয়ায় এক সভায় এ দিন তিনি বলেন, “বিলটি (রাজ্যের) যেই আইন হয়ে যাবে, প্রতারক সংস্থার সম্পত্তি ক্রোক করে তা বিক্রি করব। যে টাকা পাব, তা ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের ফেরত দেওয়া হবে। আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। অনেকটাই ফেরত দেব।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের মধ্যে যাঁদের সঞ্চয় সব চেয়ে কম ছিল, তাঁদের টাকা আগে ফেরত দেওয়া হবে। কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখ্যমন্ত্রী ফের বলেছেন, লগ্নি সংস্থার কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সেবি-র। এই দুই সংস্থার সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, “এত দিন তোমরা কি নাকে তেল দিয়ে সিপিএমের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিলে?”
সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রশ্ন তুলেছিলেন, সার্বিক ভাবে রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকা নিয়ে সেবি-র কী মতামত? সিন্হা জানান, যে ১৫টি রাজ্য এ বিষয়ে পৃথক আইন করেছে, সেখানে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাম জমানাই হোক বা তৃণমূলের সরকার, পশ্চিমবঙ্গে যে আইন তৈরি হতে দেরি হয়েছে, সে দিকেই ইঙ্গিত সিন্হার। বৈঠকের পরে গুরুদাসবাবু বলেন, “বাম সরকার যে আইন করেছিল, কেন্দ্র তাতে অনুমোদন দেয়নি। আবার তৃণমূল ক্ষমতার আসার পরেও প্রায় দু’বছর এ বিষয়ে কিছু করেনি।”
সেবি-র তরফে স্থায়ী কমিটিকে নোট দিয়ে জানানো হয়েছে, রাজ্য স্তরে সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, কেন্দ্র ও রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি রয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে রাজ্যের অর্থ দফতরের যুগ্ম সচিবকে এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। নভেম্বরে কলকাতায় বৈঠকে আয়কর দফতর ইন্টেলিজেন্স কমিটিকে জানায়, তারা ছ’টি সংস্থার বেআইনি আয়ের সন্ধান করছে। গুরুদাসবাবু বলেন, “এর থেকেই স্পষ্ট যে, রাজ্য সরকার চাইলে সারদা-কাণ্ড ঠেকাতে পারত। তবে কেন্দ্রেরও ব্যর্থতা রয়েছে। সেবি এদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায়নি।”

পুরনো খবর:
জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল বেরোতে পারে ৮ জুন
বারের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল জুন বেরোতে পারে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান ভাস্কর গুপ্ত শুক্রবার বলেন, “পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট ) এবং কম্পিউটারে উত্তরপত্রের মূল্যায়ন কী ভাবে হয়েছে, সেই তথ্য বোর্ডের ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনও পরীক্ষার্থী যদি মনে করে তার উত্তরের ঠিক মূল্যায়ন হয়নি, সে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ৫০০ টাকা ফি দিয়ে থেকে জুনের মধ্যে বোর্ডের কাছে অভিযোগ জানাতে পারে। বোর্ড তা খতিয়ে দেখবে।” মূল্যায়নে বোর্ডের তরফে ত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের সঙ্গে সঙ্গে ওই ৫০০ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান ভাস্করবাবু। তিনি বলেন, “পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ফল বার করতে দিন দুয়েক লাগবে। আশা করি, ৮ জুন ফল প্রকাশ করা যাবে।” ভাস্করবাবু জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরে পরীক্ষার্থীদের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া পিছোবে। বিডিও অফিসের মতো বিভিন্ন জেলার সরকারি অফিসকে জয়েন্টের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়। সেই অফিসগুলি ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকবে। তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়া না -মিটলে ছাত্রছাত্রীদের কোনও কলেজে আসন নির্দিষ্ট করা যাবে না। ভর্তিও শুরু হবে না।” এ -সব মাথায় রেখেই কাউন্সেলিংয়ের সূচি তৈরি হবে বলে জানান তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.