কথায় বলে, ফলের রাজা আম। জামাইষষ্ঠীর মুখে সেই আমের ঢল নেমেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাজারে বাজারে। আর সেই জোগানে এ বার বাজিমাত করছে আমচাষে জেলার অন্যতম সেরা বসিরহাট মহকুমা। জিনিসপত্রের আগুনে দামের মধ্যে ফলের রাজাই এ বার জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুর-শাশুড়ির মুখে হাসি ফোটাবে বলে মনে করছেন জেলার আম ব্যবসায়ীরা। কেননা, ফলন ভাল হওয়ায় এবং জোগান অনুকূল থাকায় আমের দামে বিশেষ হেরফের হচ্ছে না।
জেলা কৃষি দফতপ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরের মতো এ বার ঝড়-বৃষ্টি বেশি না হওয়ায় আমের ফভলন বেশ ভাল হয়েছে। দামেও সস্তা। বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন বাজারেই ১০-১৫ টাকা কিলো দরে পাওয়া যাচ্ছে হিমসাগর, গোলাপখাস, গোবিন্দভোগ, মল্লিকা, ল্যাংড়ার মতো সুস্বাদু আম। সস্তায় ঘরে আম নিয়ে যেতে পেরে ক্রেতা খুশি হলেও মাথায় হাত পড়েছে বিক্রেতাদের। মহকুমার অন্যতম আমের আড়ত টাকি রোডের পাশে বেঁকি বাজার। বাদুড়িায় পুঁড়ো, খোলাপোতা, মাটিয়া, দেগঙ্গা বাজারে কয়েক হাজার মানুষ আম ব্যবসায় যুক্ত। এখান থেকে শিলিগুড়ি, বর্ধমান ও কলকাতার বিভিন্ন বাজার ছাড়াও রাজ্যের বাইরে ঝাড়খন্ড, এমনকী বাংলাদেশ, ভুটান, নেপালেও আম যায়। |
বেঁকি বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, এখান থেকে গড়ে প্রতিদিন তিন হাজার টনের মতো আম দেশ-বিদেশের বাজারে যায়। আম বাছাই করা থেকে প্যাকেটবন্দি করা ও গাড়িতে তোলার কাজে দিনে চার-পাঁচশো শ্রমিক কাজ করেন। ব্যবসায়ীদের বক্তূব্য, এ বার ফলন ভাল হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কিন্তু লাভবান হননি। বেঁকি বাজারের অন্যতম আম ব্যবসায়ী নুর ইসলাম মণ্ডলের কথায়, “গত বচর যে আম বাংলেদেশের বাজারে সাতশো টাকা মণ বিক্রি হত, এ বার তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র চারশো টাকায়। ফলে লাভ তেমন হচ্ছে না।” পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, পচনশীল ফসল হওয়ায় লাভের আশায় বেশিদিন ধরেও রাখা যায় না। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে এ ধরনের ফল সংরক্ষণের ব্যাপারেও সরকার তেমন আগ্রহী নয়। এই অবস্থায় বেশি ফলনের ফলে তাঁদের লাভ হচ্ছে না।
তবে বেশি ফলনের ফলে ব্যবসায়ীরা অসুবিধায় পড়লেও সস্তায় ফলের রাজার স্বাদ পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি জনতা। |