বাবা-মা দু’জনেই বিড়ি শ্রমিক। টালির ছাউনি দেওয়া একটি মাত্র ঘরে সাত সন্তানকে নিয়ে বাস নুরনেহার বিবি ও মহম্মদ নাজিরুদ্দিনের। বিড়ি বেঁধে যা আয়, তা দিয়ে পেট চালানোই দুষ্কর। তবু ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য যেটুকু সামর্থ্য, তার সবটাই ব্যবহার করেছেন এই গরিব দম্পতি। এই পরিবারের ছেলে ইমরান আলি সাহেবগঞ্জ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিকে ৬১১ পেয়ে সবাইকে চমকেও দিয়েছে।
বাড়িতে বিদ্যুৎ এসেছে মাস তিনেক আগে। একটি মাত্র ঘর। পড়াশোনার পরিবেশ সেখানে অমিল। গৃহ শিক্ষকের
ইমরান আলি। |
সুযোগও পায়নি ইমরান। এর মধ্যে থেকেও সে সফল হয়েছে।
ছেলের পাশে সাধ্য মত থেকেছেন দরিদ্র বাবা-মা। তাঁদের দু’জনেরই পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি। ইমরানের মা নুরনেহার বিবি বলেন, “অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে আর পড়তে পারিনি। কিন্তু আমি চাই ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া চালিয়ে যাক। ছেলেকে ঠিক মতো বইপত্র পর্যন্ত কিনে দিতে পারিনি। টিউশনও দিতে পারিনি।” প্রতিকুলতার মধ্যেও হাল ছাড়তে নারাজ মহম্মদ নাজিরুদ্দিন। তিনি বলেন, “যত কষ্টই হোক, ওর পাশে দাঁড়াব। তবে কেউ পাশে দাঁড়ালে সুবিধা হত।” পড়শি গ্রাম কাঁকুড়িয়ার শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, “কয়েক জন শিক্ষক রাজি হয়েছেন বিনা পারিশ্রমিকে ইমরানকে টিউশন পড়াতে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইমরানকে বই কিনে।” তবে এই ভাবে জোড়াতালি দিয়ে কী শেষমেশ চালানো যাবে উচ্চ শিক্ষা? সেই চিন্তাতেই দিন কাটছে
এই বিড়ি শ্রমিক পরিবারটির।
|