মাটির দেওয়াল। টিনের চালা। দাওয়ায় বসে কুপির আলোয় অঙ্ক কষে নবগ্রামের পাঁচগ্রামের দরিদ্র পরিবারের ছেলে মহম্মদ মাসুদুল হাসান। ছেলেকে পড়াতে গিয়ে প্রতিবন্ধী বাবা দু’বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘা বন্ধকি দিয়েছেন। শারীরিক অক্ষমতার জন্য বাকি এক বিঘাও নিজে চাষ করতে পারেন না। বর্গাচাষি চাষ করে। বিনিময়ে মেলে বছরে ৪ কুইন্টাল ধান। তাতে সারা বছরের খোরাকি চলে না। ফলে রোজ দিন ভরপেট খাবারও জোটে না। এই নিত্য
মাসুদুল হাসান। |
অনটনকে উপেক্ষা করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মাসুদুল হাসান ৬১৫ পেয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে।
পাঁচগ্রাম উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুদুল বরাবরই ভালো রেজাল্ট করত। মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্যের পর ওই স্কুলেই সে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার তোড়জোড় শুরু করেছে। “তারপর জয়েন্ট দিয়ে সুযোগ পলে ডাক্তারি পড়ব।” লাজুক মুখে বলে মাসুদুল। টানাটানির সংসারে কী ভাবে চলত মাসুদুলের লেখাপড়া? তার কথায়, “স্কুলের শিক্ষকরা দরকারি বইও দিয়েছেন। যে কোনও সমস্যাতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন তাঁরা। তিন জন গৃহশিক্ষক বিনা পয়সায় পড়িয়েছেন। স্কুলের গ্রন্থগারিক বিভিন্ন রেফারেন্স বই দিয়ে সাহায্য করেছেন।” গ্রন্থগারিক জাহাঙ্গির চৌধুরী বলেন, “একে বারে হতদরিদ্র পরিবারের ওই কৃতী ছাত্রের জন্য আমরা গর্বিত।”
অভাবে মধ্যেও বাবা ছেলেকে পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়েছেন। মাসুদুল বলে, “বাবার মুখে হাসি ফুটেছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষা কপালে আছে তো?”
ভ্রম সংশোধন। পাঁচগ্রাম হাইস্কুলের মাধ্যমিকে প্রথম স্থানাধিকারীর নাম অনাথবন্ধু দাস (৬৩০)। ভুল করে অন্য নাম প্রকাশিত হয়। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমার দুঃখিত। |