মনোনয়নের তৃতীয় দিন
নন্দীগ্রামে মার খাচ্ছে সিপিআই, কংগ্রেস
র্বদল বৈঠকে নিরাপত্তার নিয়ে একগুচ্ছ আশ্বাস শোনার পর বাইরে এসে মার খেলেন নন্দীগ্রামের এক সিপিআই নেতা।
শুক্রবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনার জন্য দুপুর ১২টায় নন্দীগ্রাম-১ ব্লক অফিসে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল ব্লক প্রশাসন। বৈঠকে উপস্থিত সকলকে নির্ভয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে বলেন পর্যবেক্ষক মহম্মদ শাহিদ। সমস্যায় পড়লে অভিযোগ জানানোর জন্য নিজের মোবাইল নম্বরও দেন তিনি। কিন্তু রাস্তায় ঘিরে ধরলে আর ফোন করার সময় কোথায়? দুপুর ১টায় বৈঠক শেষে বাড়ি ফেরার পথে সিপিআই-এর নন্দীগ্রাম লোকাল কমিটির সম্পাদক কালীপদ মেইকাপকে তৃণমূলের লোকেরা যখন ঘিরে ধরে, তখন ফোন করার কোনও সুযোগই ছিল না। কালীপদবাবুর অভিযোগ, “ব্লক অফিস থেকে বেরনোর পরই প্রথমে কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক আমার পিছু নেয়। পরে আরও কয়েকজন জড়ো হয়। নন্দীগ্রাম বাজারের কাছে আমাকে ওরা জোর করে ডগলাস মাঠের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে রাস্তার উপরে ফেলে লোহার চেন, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। আমার ভোটার পরিচয়পত্র, টাকা ছিনতাই করে নেয়।” আহত কালীপদবাবু রাস্তার উপরেই পড়েছিলেন। গুরুতর আহত কালীপদবাবুকে মহম্মদপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “নন্দীগ্রাম, খেজুরি, মুগবেড়িয়া, পটাশপুর, পাঁশকুড়া-সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বামফ্রন্টের প্রার্থীদের পাশাপাশি কংগ্রেস প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দিচ্ছে, মারধর করছে। ”
এদিনই নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের রেয়াপাড়ায় এক কংগ্রেস নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ দিন নন্দীগ্রাম-২ ব্লক অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসার কথা ছিল বিভিন্ন এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের। তাঁদের জন্য কাছেই ভীমবাজারে অপেক্ষা করছিলেন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি রামনারায়ন গিরি। অভিযোগ, তৃণমূলের স্থানীয় একদল কর্মী রামনারায়ণবাবুকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করেন, জামা কাপড় ছিঁড়ে দেন, চশমা ভেঙে দেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসিত পাল বলেন, “নন্দীগ্রাম থানায় চার জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন বলেন, “নন্দীগ্রামে ব্লক অফিসের কাছে বিরোধীদলের নেতাদের মারধরের অভিযোগ ভিত্তিহীন। কারণ প্রতিটি ব্লক অফিসের সামনে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলার সমস্ত এলাকায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ চলছে। অথচ বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থী করার লোক না পেয়ে নানা মিথ্যা অভিযোগ করছে।”
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন , ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিকে, বুধবার পটাশপুরে কংগ্রেসের দুই প্রার্থী ও সিপিএম নেতা অনিল দাসকে মারধরের দু’টি পৃথক যুক্ত সন্দেহে দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা হলেন, পটাশপুরের টেপরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র সাহু ও গোপালপুর গ্রামের ভরতচন্দ্র মাইতি। শুক্রবার কাঁথি এসিজেএম আদালতে অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছেন দু’জনেই।
এ দিনই ভগবানপুর-২ ব্লকে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের মুগবেড়িয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক বিষ্ণুহরি মান্নার অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার ব্লকের বরোজ অঞ্চলের আরএসপি দলের হয়ে ভাস্কর জানা ও অজয় জানা মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলের একদল দুষ্কৃতী তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়ে সারারাত গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এ ছাড়া শুক্রবার মাধাখালি বাজারে সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অশোক মাইতিকে মারধর করে মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেয় তৃণমূলের লোকেরা। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ঘাটালে ব্লকের আকবপুরে নির্মলা ধাড়া নামে পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার মেয়ে পঞ্চায়েতে প্রার্থী হওয়ায় ঘাটালেরই যদুপুর গ্রামের সিপিএম নেতা অষ্টম হাজরাকে তৃণমূলের লোকেরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ। যদুপুরে সিপিএমের শাখা সম্পাদক অষ্টম হাজরা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তৃণমূল নেতা দিলীপ মাঝি অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.