|
|
|
|
ত্রাণের ব্যবস্থা প্রশাসনের |
বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন গ্রাম, ভেসে গেলেন যুবকও
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে জেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় মানুষ। ডেবরা ব্লকের চারটি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। জলমগ্ন এলাকার মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকালে জেলার একাধিক জলমগ্ন এলাকায় পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রজতকুমার সাইনি। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। বিডিওদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “বেশ কিছু গ্রামে জল ঢুকেছে। ত্রাণ পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। এখনই উদ্বেগের কিছু নেই।” শুক্রবার দিনভর ভারী বৃষ্টি হয়নি। ফলে, পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। |
কেশপুর-মেদিনীপুর রাস্তার
পঞ্চমীতে বাস চলাই দায়। |
কংসাবতীর জল ঢুকেছে
মেদিনীপুর শহরের নজরগঞ্জে |
|
ডেবরা, কেশপুর, খড়্গপুর-২ এবং মেদিনীপুর সদর, পশ্চিম মেদিনীপুরের এই ৪টি ব্লকের অন্তত ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলের তোড়ে এক যুবক ভেসেও গিয়েছে। তাঁর নাম মিঠু আলি। ঘটনাটি খড়্গপুর ২ ব্লকের পেলাগেড়িয়ার। বছর চব্বিশের ওই যুবকের খোঁজ চলছে। বুধবার দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবারও তাই। আর এই দু’দিনের টানা বৃষ্টিতেই জেলার এই পরিস্থিতি। জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার
এগরার জমা জলে খুদেদের
জলকেলি। —নিজস্ব চিত্র। |
তারাফেনি এবং ভৈরববাতি ব্যারেজের জল কংসাবতীতে এসে মিশেছে। তার ফলেই কংসাবতীর নদীর জলের স্রোত বেড়েছে। নদী ছাপিয়ে বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকেই বিভিন্ন গ্রামে জল ঢুকতে থাকে। শুক্রবার সকালে এক সময় কেশপুরের পঞ্চমীর রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। রাস্তার উপর দিয়ে জলের স্রোত বইতে থাকে। পরিস্থিতি দেখে রাস্তার একাংশ কাটতে হয়। স্থানীয় কয়েকজন যুবক আবার এক-একটি গাড়ি পার করে দেওয়ার জন্য চালকদের কাছ থেকে ৩০-৫০ টাকা নিতেও শুরু করে। ওই যুবকেরা রাস্তা দেখিয়ে দেন। সেখান দিয়ে গাড়ি নিয়ে যান চালকেরা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের বয়লাশোল, খুকুরমুড়ি, পাথরমারি, ধেড়ুয়া প্রভৃতি গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। অন্য দিকে, রাইপুর, ট্যাবাগেড়িয়া, মোকারিমপুর এবং গোপালপুর-ডেবরা ব্লকের চারটি জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়। নদীর জল ঢুকে সত্যপুর, ভরতপুর, গোলগ্রাম-এই গ্রাম পঞ্চায়েগুলির কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ক্ষতি হয়েছে কেশপুরের আমড়াকুচি, ধলহারা, কলাগ্রামের কিছু এলাকা। |
কংসাবতীর জল ঢুকেছে
মেদিনীপুর শহরের পালবাড়িতে। |
চাঁদনার দেউলডাঙা
গ্রামে জলমগ্ন খেত। |
|
জমিতে জল জমে চাষেরও ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে তিল, বাদাম প্রভৃতি। এ দিকে, নিম্মচাপের বৃষ্টিতে যদি এই হাল হয়, তা হলে তাহলে বর্ষার বৃষ্টি শুরু হলে কী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরাও। জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি ব্লকেই ত্রাণ মজুত রয়েছে। ব্লক থেকেই জলমগ্ন এলাকায় ত্রাণ পৌঁছনোর কাজ চলছে। ত্রাণ প্রয়োজন হলে জেলায় জানাতে বলা হয়েছে। তখন জেলা থেকে ত্রাণ ব্লকে পাঠানো হবে। এ দিকে, পর্যাপ্ত ত্রাণের দাবিতে শুক্রবার সকালে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ করেন জলমগ্ন গ্রামের মানুষেরা। যান চলাচল ব্যাহত হয়। যানজটেরও সৃষ্টি হয়। তবে আশ্বাস পেয়ে আধ ঘণ্টা পর অবরোধ ওঠে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) বলেন, “কংসাবতী নদীর জলেই বেশ কিছু গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়ে। কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে জল নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।” নতুন করে বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেই আশা জেলা প্রশাসনের।
|
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল ও রামপ্রসাদ সাউ।
|
এই সংক্রান্ত অন্য খবর: রক্ষা কলকাতার, জেলা
ভাসিয়ে নিম্নচাপ উত্তরে
পুরনো খবর: বৃষ্টি নামতেই নাকাল দুই শহর |
|
|
|
|
|