হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে স্পশর্র্কাতর এলাকায় ভোট কেমন হচ্ছে, দফতরে বসে নির্বাচন কমিশনের অফিসারেরা সরাসরি তার ছবি দেখবেন। গোটা দেশে এই প্রথম এ ধরনের বন্দোবস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেছে নির্বাচন কমিশন। কাল, রবিবার হাওড়ায় উপনির্বাচন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্ত শুক্রবার জানান, ভোটের দিন বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় কমিশনের দু’টি গাড়ি ঘুরবে। তাতে কমিশনের অফিসারেরা তো থাকবেনই, সেই সঙ্গে থাকবে ভিডিও ক্যামেরা। গাড়ি দু’টির মাথায় ওই ক্যামেরা বসানো রয়েছে। যার সঙ্গে উপগ্রহের মাধ্যমে যোগ থাকবে নির্বাচন কমিশন দফতরের।
সুনীলবাবু বলেন, “ওই ব্যবস্থাকে আমরা বলছি লাইভ মনিটারিং অফ সেনসিটিভ এরিয়া।’’ গাড়িতে লাগানো ক্যামেরা ভোটকেন্দ্রের বাইরের ছবি পাঠাবে। কমিশনের দফতর তাদের যেখানে যেতে বলবে, গাড়ি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পৌঁছে ছবি পাঠাবে। এ ছাড়া, প্রতি বুথে লাগানো থাকছে ডিজিট্যাল ক্যামেরা। তাতেই উঠে যাবে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ভিতরের ছবি। |
এর বাইরেও প্রতি বুথের সামনে খুঁটিনাটি ভিডিও তোলা হবে। এর জন্য এক হাজার চিত্রগ্রাহক রাখা হবে বলে এ দিন হাওড়ার জেলাশাসক শান্তনু বসু এবং পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে জানিয়েছেন। ভোটদাতাদের লাইনে সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই ছবি তুলে রাখবেন তাঁরা।
সুনীলবাবু জানান, হাওড়ায় রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীও থাকবে। জেলাশাসক এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, যে ভোটকেন্দ্রে চার থেকে ১১টি বুথ রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আর যেখানে চারটির কম বুথ, সেখানে এক জন করে সশস্ত্র পুলিশ এবং এক জন লাঠিধারী পুলিশকর্মী। সব মিলিয়ে গোটা অঞ্চলে থাকবে মোট ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। সঙ্গে ৬১ জন ইনস্পেক্টর, ৩৭৬ জন অফিসার এবং ৪৩৭৬ জন কনস্টেবল।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, প্রতি বুথে ‘মাইক্রো অবজারভার’ রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসার ও কর্মীদের মাইক্রো অবজারভার করা হয়েছে। তাঁরা সরাসরি পর্যবেক্ষকদের খবরা দেবেন। সমস্ত প্রিসাইডিং অফিসারকে মোবাইল ফোন দেওয়া হচ্ছে। দু’ঘণ্টা পরপর ভোটের অবস্থা সম্পর্কে এসএমএস করে তাঁরা কমিশনকে জানাবেন। কমিশনের দিল্লি অফিস এবং রাজ্য অফিস একই সঙ্গে ওই এসএমএস পাবে। পাশাপাশি, তা চলে যাবে জেলা নির্বাচনী অফিসার (জেলাশাসক)-এর কাছে। ১৪০ জন সেক্টর অফিসারের কাছে দেওয়া থাকছে অ্যানড্রয়েড ফোন। সেক্টরে কোনও অসুবিধা হলে সেই ফোনের মাধ্যমে তিনি তা কমিশনকে জানাবেন।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, হাওড়ায় মোট ভোটার ১৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৫৮ জন। ভোট হবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। বুথের সংখ্যা ১৮৫১। স্পর্শকাতর বুথ ৫৫৪টি। এই লোকসভা এলাকায় পরিচয়পত্র পেয়েছেন ৯৮.৭৫ শতাংশ ভোটার। যাঁরা পাননি, তাঁরা কমিশন-নির্ধারিত প্রমাণপত্র দেখিয়ে ভোট দিতে পারবেন। সুনীলবাবু জানান, এ দিন পর্যন্ত ৫৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৬ রাউন্ড গুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও জমা নেওয়া হয়েছে ১৬৯৮ জনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক। যে ৯৭৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল, তাদের ধরা হয়েছে। এর বাইরেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছে ৮৬১ জনকে। |