|
|
|
|
গানে-গেমে প্রচার তরুণ ভক্তদের,
কংগ্রেসের যুবরা মোদীর শিবিরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাহুল গাঁধীর দুর্গে ফাটল ধরিয়ে নিজের জমি গোছানোর চেষ্টা করছেন নরেন্দ্র মোদী।
গুজরাতে তৃতীয় বার জয়ের পরেই দিল্লির একটি কলেজে এসে যুবকদের মন জয়ের চেষ্টা করেছিলেন মোদী। তখনই তিনি স্পষ্ট করে দেন, যুব সম্প্রদায়কে কাছে টানাই তাঁর লক্ষ্য। কারণ দেশে ভোটারদের ষাট ভাগের বেশি যুবক। ফলে তারাই ভারতের ভাগ্যনিয়ন্ত্রক। সম্প্রতি বিজেপি সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকেও মোদী একই দাওয়াই দিয়েছেন। এ বারে গুজরাতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন মোদী। কংগ্রেসের যুব সংগঠন ‘এনএসইউআই’-এর সিংহভাগ কর্মী-নেতাই একযোগে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি সূত্রের দাবি, ক’দিন আগেও রাহুল গাঁধী যখন গুজরাতের যুব সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজার কথা বলে এসেছেন, সেই সময় মোদীর টানে সংগঠনের প্রায় এক হাজার সদস্য বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন।
দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন বলেন, “কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গাঁধীর থেকে দিশানির্দেশও কোনও কাজ দেয়নি। গুজরাতে কংগ্রেসের যুব সংগঠনের প্রায় নব্বই ভাগ নেতা-কর্মীই এখন মোদীর আশ্রয়ে চলে এসেছেন। এখন যুব সমাজও বুঝতে পারছেন, রাহুল গাঁধীতে আর ভরসা নেই। বিজেপি-ই তাঁদের ভবিষ্যৎ। আমরা অন্য রাজ্যের কংগ্রেসের যুব সংগঠনের সদস্যদেরও আবেদন করছি, বিজেপি-তে যোগ দিয়ে দেশ গড়ার কাজে ব্রতী হোন।”
শুধু কংগ্রেসের যুব সংগঠনকে আকর্ষণ করা নয়, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে দিল্লির মসনদে বসানোর জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তের যুব সম্প্রদায় ও সংখ্যালঘুদেরও পুরোদমে প্রচারে নামাতে দারুণ তৎপর এখন দলের মোদী-অনুরাগীরা। আজই দিল্লিতে বিজেপি-র যুবমোর্চার প্রাক্তন সদস্য তেজিন্দ্রপাল সিংহ বাগ্গার উদ্যোগে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ছত্তীসগঢ়ের মুসলিম ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান হাজি সেলিম আশরাফি, জাতীয় মুসলিম মঞ্চের প্রতিনিধিদেরও নিয়ে আসা হয়েছিল। মোদীকে ধর্মনিরপেক্ষ আখ্যা দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী করার পক্ষে সওয়াল করেন। পাশাপাশি দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে মোদী ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে মোদীকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে মোদীর নামে টি-শার্ট, কাপ, কমিক বই, এমনকী গেমও বাজারে আনছেন এই যুবকরা। এই গেমে থাকছে, কী ভাবে মোদী দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন। মোদীর নামে রক গান গাইছেন এই তরুণরা। লেখা হচ্ছে কবিতাও।
মোদীভক্ত এই যুবকরা বিভিন্ন কবিতার মাধ্যমে উস্কে দিয়েছেন বিজেপি-র অন্তর্কলহকেও। তাঁরা লালকৃষ্ণ আডবাণীকে আবেদন জানান, তিনি যেন নিজের স্বপ্ন ভুলে মোদীর মাথাতেই হাত রাখেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও মোদীর পক্ষে ছেয়ে যেতে চাইছেন এঁরা। ক’দিন আগে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পর খবর ছড়ায়, বিজেপি-তে মোদী-বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ বৈঠকের মাঝে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পরে টুইটারে সুষমা সেই বক্তব্য খণ্ডন করেন। কিন্তু টুইটারে সুষমার সেই বক্তব্যের সূত্রেই অনেকে আবেদন জানান, তিনি যেন মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার ব্যাপারে উদ্যোগী হন।
বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, প্রত্যক্ষ ভাবে এঁরা হয়তো বিজেপি-র সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু মোদী ও তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের থেকে প্রচ্ছন্ন সমর্থনও রয়েছে এই যুবকদের পিছনে। দলের এক নেতার কথায়, “মোদীকে ঠেকাতে এক দিকে কংগ্রেস ব্যবহার করছে সিবিআই ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবি-কে। আবার খোদ বিজেপি-র মধ্যেও তাঁকে রোখার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু দেশ জুড়ে মোদীকে ঘিরে যে আকর্ষণ তৈরি হয়েছে, যুবকদের মধ্যেও তার প্রভাব পড়ছে। তাঁরাও এখন আস্থা রাখছেন মোদীতে।” |
|
|
|
|
|