ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ভূগর্ভস্থ দীর্ঘতম সুড়ঙ্গের কাজ শুক্রবার শেষ হল। নির্ঘণ্ট মেনে নির্দিষ্ট সময়ে এই কাজ হল বলে দাবি প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক কলকাতা মেট্রো রেল নিগমের (কেএমআরসি)। এর ফলে সুভাষ সরোবর থেকে ফুলবাগান প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের সিংহভাগ এগিয়ে গেল।
বেলেঘাটা খালপাড় থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত তৈরি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ১৩২০ মিটার। কেএমআরসি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দিওয়ানজি এ দিন বলেন, “সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয় গত বছর অক্টোবরে। ৫.৮ মিটার ব্যাসের সুড়ঙ্গটির তলার অংশ রাস্তা থেকে ১৮ মিটার নীচে।” পূর্ব অর্থাৎ সল্টলেকমুখী সুড়ঙ্গটির পাশে অপর একটি সম-দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে। পশ্চিমমুখী সেই সুড়ঙ্গটি আরও ২০০ মিটার বাকি আছে। কেএমআরসি সূত্রের খবর, জুনের শেষ দিকে সেটির কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা।
উপর থেকে গর্ত না খুঁড়ে ‘টানেল বোরিং’ যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি হচ্ছে ৩.৭৯ কিলোমিটার পথ। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সুভাষ সরোবর থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত পাশাপাশি দু’টি সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হয় গত বছর জুলাইয়ে। এর দৈর্ঘ্য ছিল ৭৫০ মিটার। আগের অংশ পর্যন্ত ৬টি স্টেশন-সহ ৫.৫৯ কিলোমিটার মেট্রোর পথ যাবে উপর দিয়ে। বাকি হচ্ছে ভূগর্ভে। কেএমআরসি সূত্রের খবর, এ দিন যে সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হল, সেটি সবচেয়ে দীর্ঘ। হাওড়ায় গঙ্গার নিচ দিয়ে যে সুড়ঙ্গ হবে, তার দৈর্ঘ্য ৮০০ মিটার।
ঠিক ছিল সল্টলেক থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ৯.৩৬ কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ হবে ২০১৩-র অগস্টে। পুরো প্রকল্প শেষের কথা ছিল ২০১৪-র অক্টোবরে। সেপ্টেম্বরে এই দুই লক্ষ্যমাত্রা পিছিয়ে হয় ২০১৫-র জানুয়ারি ও ২০১৬-র সেপ্টেম্বর। মানচিত্রের পুনর্বিন্যাস নিয়ে ধন্দে হাওড়ার দিকে কাজ আটকে। শুক্রবার কেএমআরসি-র এক কর্তা বলেন, “দত্তাবাদের জট কাটাতে চেষ্টা করছি। তবেই ২০১৫-র অগস্টে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে। সে ক্ষেত্রে শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক পর্যন্ত মেট্রো চালানো সম্ভব হবে।”
২০০৯-এর ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় সল্টলেক থেকে হাওড়া পর্যন্ত কাজ। প্রস্তাবিত ৪৮৭৪.৫৯ কোটি টাকার মধ্যে ২,২৫৩ কোটি সামান্য সুদে ঋণ দিতে রাজি হয় ‘জাপান ইন্ট্যারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি’। বাকিটা দেওয়ার কথা ছিল কেন্দ্র ও রাজ্যের। এর পরে সমীকরণ বদলায়। যাত্রাপথ বদল নিয়ে চলছে জটিলতা। ফলে সামগ্রিক প্রকল্প শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় থাকছেই। |