অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার লাইনে কেউ ব্যাগ রেখে দিয়েছেন। কেউ কাগজে নাম লিখে পাথর চাপা দিয়ে রেখে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার ওই হিসেবেই লাইন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি অনেকের। কেউ কেউ আবার আচমকা এসে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে লাইনে। তা নিয়ে হট্টগোলপরে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত। রাতে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে বসে থাকছেন প্লাস্টিকের শেডের। পাহারা দিচ্ছে পুলিশ। এই অবস্থায়, আরও কাউন্টারের দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এজেন্ট ও আমানতকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার অভিযোগপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছেন তাঁরা। জমা পড়ছে মাত্র আট হাজারের কিছু বেশি অভিযোগপত্র। বৃহস্পতিবার অবশ্য অস্থায়ী ভাবে একটি কাউন্টার চালু করে ৫৯৪টি অভিযোগ জমা নেওয়া হয়। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আটটি কাউন্টারে অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। এদিন একটি অস্থায়ী কাউন্টার করা হয়। জেলা ভিত্তিক কাউন্টার করা হয়েছে। আরও নতুন কাউন্টার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই তা করা হবে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, আটটি কাউন্টার সামলানোর জন্য ১৪ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে নিয়োগ করছে কমিশন। এর বাইরে আরও ২ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আটটি কাউন্টারে ১৬ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নথিভুক্ত করা, নজরদারি সবমিলিয়ে আরও ৮ জন রয়েছে। এই অবস্থায়, অতিরিক্ত কাউন্টার করতে হলে নতুন করে কর্মী নিয়োগ করতে হবে। সে জন্য বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
সারদা কর্মী, এজেন্ট ও আমানতকারীদের পক্ষ থেকে প্রণব মোহান্তি বলেন, “সারাদিন দাঁড়িয়ে থেকেও অভিযোগ জমা দিতে পারছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে পরের দিনের ভরসায় শেডের নিচে জেগে জেগে রাত কাটাচ্ছেন।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, একবারে ২৫টির উপরে অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে না। কোচবিহারের টাকাগাছ থেকে ৫ মহিলা সহ সারদা’র ১২ জনের এজেন্ট ও আমানতকারীর দল মঙ্গলবার হিমাঞ্চল বিহারে পৌঁছন। বুধবারেও সব অভিযোগ পত্র জমা দিতে পারেননি তাঁরা। দু’দিন ধরেই প্লাস্টিকের শেডের নিচে রয়েছেন তাঁরা। মালদহের পঞ্চনন্দপুরের কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, তিনি ৪০০টি অভিযোগপত্র নিয়ে বুধবার হিমাঞ্চল বিহারে পৌঁছেছেন। কমিশন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেড তৈরি করে দেওয়া হয়। এদিন ৮২০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়াল ৮৮ হাজার ৭৪৬। |